কৃষ্ণনাম জপমালার থলি বানাচ্ছেন হজরত, সম্প্রীতির এক অনন্য নজির পূর্বস্থলীর গ্রামে
Bengal Times News, 26 April 2025
বেঙ্গল টাইমস নিউজ, পূর্বস্থলী : "মোরা একই বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু মুসলমান, মুসলিম তার নয়নমনি হিন্দু তাহার প্রাণ"। কাজী নজরুল ইসলামের সম্প্রীতির এই কথাগুলো প্রতিটি অক্ষরে অক্ষরে ফুটে উঠেছে পূর্বস্থলী ১ নম্বর ব্লকের সিংহজুলি গ্রামে। গ্রামের হজরত মন্ডল দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে কৃষ্ণনাম জপমালার থলি বানাচ্ছেন। দেশ জুড়ে যতই সাম্প্রদায়িক অস্থিরতা থাকুক না কেন কৃষ্ণ ভক্তদের জপমালার থলি তৈরি করে সম্প্রীতির এক অনন্য নজির সৃষ্টি করে চলেছেন পূর্বস্থলী ১ নম্বর ব্লকের সিংহজুলি গ্রামের বাসিন্দা হজরত মণ্ডল।
শুধু তাই নয়, নিজের নিপুণ হাতে জপমালার থলিতে ফুটিয়ে তুলছেন হিন্দুদের নানা দেবদেবীর ছবি। এমব্রয়ডারি কাজের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলছেন জপ মালার থলিতে অসাধারণ শিল্প নৈপুণ্য। এখানেই তিনি থেমে থাকেন নি। এই শিল্পকলার মাধ্যমে তিনি কর্মসংস্থানের দিশা দেখিয়েছেন। তার হাত ধরে তার স্ত্রী রুপিয়া খাতুন বিবি সহ গ্রামের আরো মুসলিম মহিলারা তার কাছে কাজ শিখে এই জপমালা থলি তৈরি করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। এভাবেই সম্প্রীতির এক দৃষ্টান্তের বার্তা ছড়িয়ে দিচ্ছেন সিংহজুলির হজরত, রুপিয়া, আনোয়ারা,শাহানারা, রুনা খাতুনেরা।
পূর্ব বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলী ১ ব্লকের সিংহজুলি মসজিদ পাড়া এলাকার হজরত মন্ডল জানান , এমব্রয়ডারির কাজের জন্য দিল্লিতে যান। সেখান থেকে বাড়িতে ফিরে আসার পরে মায়াপুরের ইসকনের এক ব্যক্তির সাথে তার পরিচয় হয়। সেই সূত্র ধরে প্রথম তিনি এই কাজ করেন । তারপর থেকে এটাকেই তিনি পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন। পাশাপাশি গ্রামেরই ১৫-১৬ জন মুসলিম মহিলাকেও কাজ শিখিয়ে তিনি স্বাবলম্বী করেছেন। অন্যদিকে ভিন গ্রামের হিন্দু মহিলারাও তাঁর থেকে এই কাজ শিখে বাড়িতে কাজ নিয়ে সেই কাজ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন। হজরত এর কথায় আমরা হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে কোন ভেদাভেদ দেখিনা। এই জপ মালার থলির চাহিদা নদীয়ার মায়াপুরে অনেক বেশি। আর তাই সেখানে এই জপমালার থলি পাঠিয়ে তিনিও লাভবান হচ্ছেন, অন্যদিকে হজরতের শেখানো পথ ধরে স্বাবলম্বী হচ্ছেন এলাকার হিন্দু ও মুসলিম মহিলারা।