Sahitya Parishad
মিতালী সাহিত্য পরিষদের বর্ণময় অনুষ্ঠান ও কাব্য সংকলন প্রকাশ
Bengal Times News, 17 September 2024
লুতুব আলি, কলকাতা : অবক্ষয়ী সমাজ ব্যবস্থার অবসান ঘটাতে এবং বিশ্ব মৈত্রী স্থাপন করতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছে মিতালী সাহিত্য পরিষদ। শিয়ালদহর কৃষ্ণপদ ঘোষ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট হলে মিতালী সাহিত্য পরিষদের দ্বিতীয় বর্ষের বর্ণময় অনুষ্ঠান হয়। মিতালী সাহিত্য পরিষদের দুই প্রতিষ্ঠাতা বিশিষ্ট কবি মিতা দাস ও প্রদীপ মন্ডল অনুষ্ঠানের নান্দনিক সূচনা পর্বে স্বাগত ভাষণ দেন। জেলা সহ কলকাতার যেকোনো অনুষ্ঠানে তিলোত্তমা তথা অভয়ার নৃশংস ভাবে হত্যা করার প্রতিবাদ জানানো হচ্ছে। এই অনুষ্ঠানেও সেই ছবি দেখা গেল। এরই সঙ্গে বীরভূমের ভূমিপুত্র কবি তথা কথাসাহিত্যিক কমল চক্রবর্তীর আকস্মিক প্রয়াণের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
মিতালী সাহিত্য পরিষদের নামকরণ করা হয় তিন ব্যক্তিত্বের মহামহিম মিলন দিয়ে। মিতালী দাস, প্রদীপ মন্ডল এবং বাংলাদেশের বিশিষ্ট কবি প্রদীপ মহন্ত এই তিনজনের সাহিত্যের প্রতি নিবেদিত প্রাণ... একটি বিন্দুতে মিলিত হওয়ার ফসল হচ্ছে মিতালী সাহিত্য পরিষদ। প্রদীপ মহন্ত, প্রদীপ মণ্ডল কে মিতা বলে আখ্যায়িত করেন। এই দুই মিতা ও মিতা দাসের মিলন ঘটায় মিতালী সাহিত্য পরিষদ। প্রদীপ মণ্ডল বলেন, অবক্ষয়ী সমাজ ব্যবস্থা সমগ্র পৃথিবীকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছে। জাত, পাত, বর্ণবৈষম্য, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করছে মিতালী সাহিত্য পরিষদ। মিতালী সাহিত্য পরিষদ বাংলা তথা কেবল ভারতবর্ষই নয় এর ব্যাপ্তি বাংলাদেশ, ইংল্যান্ড, মেক্সিকো, ইতালি প্রভৃতি দেশে মিতালী সাহিত্য পরিষদের দর্শনকে ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। মিতালী সাহিত্য পরিষদের মূল লক্ষ্য বিশ্ব মৈত্রী ও ভ্রাতৃত্ববোধ স্থাপন করা, প্রতিভার বিকাশ, মূল্যায়ন, সমাজ চেতনার প্রসার ঘটানো।
মিতা দাস বলেন, মিতালী সাহিত্য পরিষদের বর্তমানে সদস্য সংখ্যা প্রায় ছয় হাজার। এই প্লাটফর্মে নামি, অনামি লেখক লেখিকা এবং গুণীজনদের অবাধ মিলনে এক পবিত্র মিলন ক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। উল্লেখ্য, এই অনুষ্ঠানে বীরভূমের ভূমিপুত্র তথা বিশিষ্ট কবি কমল চক্রবর্তী স্মারক বক্তৃতায় আলোকপাত করেন গবেষক, প্রাবন্ধিক অধ্যাপক ডিলিট ড. নির্মল কুমার বর্মন। তাঁর উদ্দিপ্ত কন্ঠে ঝরে পড়ে প্রয়াত কবি সাহিত্যিক কমল চক্রবর্তীীর সৃষ্টি সাহিত্য ও প্রত্যন্ত গ্রামে দুস্থ আদিবাসী সম্প্রদায়ের মানুষদের মধ্যে সেবা ও শিক্ষাদানের মহৎ কর্ম যজ্ঞের কথা। এবং সেই সঙ্গে বর্তমান কবি, সাহিত্যিকদের সমাজ চেতনামূলক আলোচনা। ড. কৃষ্ণা বসু, বিশিষ্ট কবি রেবা সরকার, গ্রন্থ প্রকাশক রাকেশ শর্মা মননশীল আলোচনায় অংশ নেন। কবি সম্মেলনে রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে কবি, সাহিত্যিকরা অংশগ্রহণ করেন।
অনুষ্ঠানে কথাসাহিত্যিক কমল চক্রবর্তী স্মৃতি স্মারক পুরস্কার ২০২৪ প্রদান করা হয়। এই অনুষ্ঠানে বর্তমান কালের প্রায় শতাধিক কবি সাহিত্যিকদের লেখনি সমন্বয়ে যৌথ কাব্য সংকলন মৈত্রী-২ এর শব্দের ডালি সম্পাদনায় প্রদীপ মন্ডল ও উক্ত সাহিত্য পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কবি শ্রীমতি মিতা দাসের একক কাব্যগ্রন্থ ধূসর গোধূলি বেলা এবং পরিবারের মুখ্য পরিচালক সম্পাদক প্রদীপ মন্ডলের একক কাব্যগ্রন্থ নির্ঝরের নৈঃশব্দ রংমিলান্তি প্রকাশনীর প্রকাশনায় শুভ মোরক উন্মোচিত হয়। এ দিনের অনুষ্ঠানটি সুচারুভাবে সঞ্চালনায় ছিলেন সর্বানী দাস।