Mohanayak Uttan Kumar
রাজধানী দিল্লিতে মহানায়ক উত্তমকুমার এর ৪৩তম মৃত্যু বার্ষিকীতে প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য
Bengal Times News, 12 August 2024
লুতুব আলি, নতুন দিল্লি : উত্তমকুমার মানেই ভুবন ভোলানো হাসি, মায়া ভরা চোখ, অনবদ্য অভিনয় তাঁর জুটি মেলা ভার। মহানায়ক উত্তম কুমারের প্রয়াণ দিবস ৪৪ বছরে পা দিল। মহানায়ক উত্তম কুমারকে রাজধানী দিল্লিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করল কলকাতার কলতান ওয়েভস ফাউন্ডেশন। বাংলা ভাষাভাষী সিনেমা প্রেমী মানুষদের কাছে মহানায়ক উত্তম কুমার আজও সমানভাবে সমাদৃত। মহানায়কের বর্ণময় জীবনের দিকগুলি জাতীয় স্তরে আলোকপাত করার জন্য এই সংগঠনটি দিল্লিতে কোথায় গানে উত্তম শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করল। কলকাতার ভূমি কন্যা, বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী ও বিশিষ্ট সংগঠক মধুমিতা বসু রাজধানীতে উত্তম শীর্ষক এই বর্ণময় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেন।
মধুমিতা দেবীর কলতান ওয়েবস ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে বাঙালি সংস্কৃতিকে সর্বভারতীয় স্তরে উপস্থাপিত করতে সর্বতোভাবে সহায়তা করে চলেছেন। নতুন দিল্লির চিত্তরঞ্জন পার্কের বিপিনচন্দ্র পাল মেমোরিয়াল ট্রাস্ট হলে মহানায়ক উত্তম কুমারকে নিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি অনুষ্ঠানে যে সমস্ত গুণী ব্যক্তিদের উজ্জ্বল উপস্থিতি ছিল তাঁরা হলেন নতুন দিল্লির বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তপন রায়, নাট্য ব্যক্তিত্ব তথা ধূমকেতু নাট্যগোষ্ঠীর কর্ণধার, নতুন দিল্লির চিত্তরঞ্জন ভবন সি আর পার্কের সম্পাদক সিদ্ধার্থ দাশগুপ্ত, রাইসিনা বেঙ্গলি স্কুলের অধ্যক্ষা সর্বাণী সেনগুপ্ত সহ চন্দ্রিমা বসাক, রজত চক্রবর্তী, আমেরিকা থেকে এসেছিলেন সংগীতশিল্পী অনিমিত ভট্টাচার্য প্রমুখ।
১৯২৬ সালের ৩ সেপ্টেম্বর কলকাতার আহিরী টোলায় মামা বাড়িতে অরুণ কুমার চট্টোপাধ্যায়ের জন্ম হয়। তাঁর পিতৃপুরুষের বাড়ি ভবানীপুরে। অরুন কুমারের মাতামহ তাঁকে উত্তম বলেই ডাকতেন। পিতা সাতকড়ি চট্টোপাধ্যায়, মাতা চপলা দেবীর কৃতি সন্তান ছিলেন অরুন কুমার। ছাত্রাবস্থা থেকেই তিনি খুবই মেধাবী ছিলেন। কলকাতা সাউথ সাবর্ণ স্কুলের পড়া শেষ করে তিনি গোয়েঙ্গা কলেজে বিজনেস এবং কমার্স নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। কলেজ জীবনের মাঝ পথে তিনি কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টে ক্ল্যারিক্যাল পদেও তিনি বেশ কিছুদিন চাকরি করেন। অরুন কুমারের শিল্পী সত্তা চাকরি জীবনে আবদ্ধ থাকতে পারেননি। কলকাতা নামে নাট্যগোষ্ঠীতে তিনি নিয়মিত নাটক করতে করতে পরিচালক নীতিন বোসের নজরে আসেন। ১৯৪৮ সালে অরুণ কুমার চট্টোপাধ্যায়ের প্রথম ছবি দৃষ্টিদান দিয়ে সিনেমা জগতে প্রবেশ করেন। অরুন কুমার অভিনীত পরপর বেশ কিছু সিনেমা ফ্লপ হওয়ায় তিনি ভেঙে পড়েছিলেন। টলিউডে তিনি তখন ফ্লপ মাস্টার জেনারেল হিসেবে অনেকে তাকে রহস্য করেছিলেন! সিনেমা ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় সাড়ে চুয়াত্ত ছবি করার অফার আসে। এই ছবিতে জুটি-সুচিত্রার সঙ্গে অভিনয় করে অরুণ কুমার চট্টোপাধ্যায় খ্যাতের উচ্চ শিখরে পৌঁছে যান। একে একে তিনি নায়ক, মহানায়কের শিরোপা পান। অরুণ কুমার চট্টোপাধ্যায়, মহানায়ক উত্তম কুমার নামে পরিচয় লাভ করেন। সত্যজিৎ রায় অবশ্য উত্তম কুমারের প্রথম দিকে অভিনয় দেখে তারিফ করেছিলেন। সত্যজিৎ বাবু বলেছিলেন অরুণ কুমার চট্টোপাধ্যায় ভবিষ্যতে একদিন বড় মাপের অভিনেতা হবেন।
কলতান ওয়েবস ফাউন্ডেশন এর কর্ণধার মধুমিতা বসু বলেন রাজধানীতে উত্তম কুমারের শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করে দিল্লিতে দারুন ভাবে প্রশংসিত হয়েছি। মহানায়ক কে শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করতে এসে উপলব্ধি হলো মহানায়ক এখনো মানুষের মনে কতটা প্রভাব বিস্তার করে আছেন। মহানায়ক উত্তম কুমার শারীরিকভাবে আজ আমাদের মধ্যে উপস্থিত না থাকলেও শুধু বাংলায় নয়, ভারতবর্ষ তথা সারা বিশ্বের বাঙ্গালীদের কাছে তিনি আজও চিরস্মরণীয় এবং সর্বোত্তম।