Classical Art
ক্লাসিক্যাল মিউজিক ইন্সট্রুমেন্টের বৈচিত্র্যময় দিকগুলি নিয়ে অসাধারণ চিত্র প্রদর্শনী
Bengal Times News, 24 May 2024
লুতুব আলি, মুম্বাই : তিলোত্তমা কলকাতার বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী গোপাল চন্দ্র নস্কর মুম্বাই-এ এটারনাল টিউন বিষয়ক একক চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে তাক লাগিয়ে দিলেন। ভারতবর্ষের ক্লাসিক্যাল মিউজিকের ইন্সট্রুমেন্টের বৈচিত্র্যময় দিকগুলি নিয়ে এই প্রদর্শনীর আয়োজন । মুম্বাইয়ের জাহাঙ্গীর আর্ট গ্যালারিতে সপ্তাহব্যাপী এই একক চিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন গুরুকুল ইনস্টিটিউটের প্রেসিডেন্ট মহেশ ভাই গান্ধী। এই অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মুম্বাইয়ের নীলকান্ত গ্রুপের ধর্মেশ প্রেসিডেন্ট কে উপাধ্যায়, প্রখ্যাত স্কাল্পচার রতন কৃষ্ণ সাহা, চিত্রশিল্পী রমেশ পচপান্দা, সতীনাথ দাস প্রমুখ। ভারতবর্ষের ক্লাসিক্যাল মিউজিক কে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দিতে যাদের অগ্রণী ভূমিকা পন্ডিত রবিশঙ্কর, ওস্তাদ জাকির হোসেন, পন্ডিত ভীমসেন যোশী, ওস্তাদ বিসমিল্লাহ খান, পন্ডিত হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া, ড. এল সুব্রামানিয়াম প্রমুখ।
সোনালী দিনের এই সমস্ত বরেণ্য শিল্পীরা ভারতের উচ্চাঙ্গ সংগীত, মার্গ সংগীতকে নিয়ে কাজ করতে গিয়ে শিল্প ও শিল্পীর সত্তা একাকার করে গবেষণার বিভিন্ন দিক উন্মোচন করে গেছেন। ঠিক এখান থেকেই বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী গোপাল চন্দ্র নস্কর তাঁর শিল্পী সত্তাকে নিয়ে গবেষণামূলক কাজ করতে গিয়ে আলোড়ন তুলেছেন।
এক সাক্ষাৎকারে গোপালচন্দ্র নস্কর বলেন, অঞ্চল ভেদে ক্লাসিক্যাল মিউজিকের বিভিন্ন ইন্সট্রুমেন্ট এর অ্যাসেম্বলগুলো হওয়া উচিত। আমি অঞ্চল ভেদে এই অ্যাসেম্বেল গুলোকে চিত্রের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছি। পন্ডিত অজয় চক্রবর্তী, ওস্তাদ জাকির হোসেন প্রমুখদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। গোপাল বাবুর বিভিন্ন ছবিতে পশুর সিং, পেঁচা, হুঁকো এই সমস্ত গুলিকে প্রতীকী হিসাবে দেখানো হয়েছে। সিং হচ্ছে প্রবল শক্তির প্রতীক। পেঁচাদের মূলত বাইরে জগতে তাদের রাত্রের বেলায় আগমন ঘটে। যেকোনো শিল্পী, সাহিত্যিক, গবেষকরা মূলত রাত্রি টিকেই অধিকাংশ সময় বেছে নেন। ছবির অনেক জায়গায় হুঁকো দেখানোর কারণ হিসেবে গোপাল বাবু নির্ণয় করেছেন নেশা। শিল্পী যখন আপন কাজে ব্যস্ত থাকেন তখন বহির্বিশ্বের পার্থিব অনেক কিছুই তাঁরা ত্যাগ করেন।
গোপালবাবু বিভিন্ন ইন্সট্রুমেন্ট এর মধ্যে গরুর চোখ, ঠোঁট কে কল্পনা করে পাখির মধ্য দিয়ে পুরুষ প্রকৃতি বা মহিলা প্রকৃতি কে বোঝানো হয়েছে। গোপালবাবু ক্লাসিকাল মিউজিক এর বিভিন্ন ইন্সট্রুমেন্ট গুলিকে অদ্ভুতায়ন ঘটিয়ে এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন ঘটিয়েছেন। এর আগে গোপালবাবু ব্যাঙ্গালোরে ছবির এই ঘরানার উপর একক প্রদর্শনী করে বিশেষ সুনাম অর্জন করেছেন। আলাউদ্দিন খানের নাতনি সুহানা খান একজন ভিজিটর হিসেবে ব্যাঙ্গালোর থেকে গোপাল বাবুর কাছ থেকে বেশ কিছু ছবি কিনে এবং মতামত দিয়ে উৎসাহিত করেন।
বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী দীপঙ্কর সমাদ্দার বলেন, গোপাল বাবু অভাবনীয় কাজের মাধ্যমে সমগ্র পৃথিবীর কাছে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচিত করলেন। ক্লাসিক্যাল মিউজিকের ইন্সট্রুমেন্টাল দিকগুলি এমন নিখুঁতভাবে চিত্রায়ন ঘটিয়েছেন যা দেখে মনে হবে ছবি কথা বলছে। কলকাতার বিশিষ্ট চিত্র শিল্পীদের অভিমত অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পর অন্তরের সুর নিয়ে গোপাল চন্দ্র নস্কর যে কাজ করছেন তা অভাবনীয়।