ডিজিটালাইজেশনের যুগে হালখাতার গরিমাকে তুলে ধরতে পশ্চিমবঙ্গ নাগরিক সমাজ এর উদ্যোগ
Bengal Times News, 12 April 2024
লুতুব আলি, কলকাতা : পয়লা বৈশাখ সমাগত। বাংলা নববর্ষ-কে স্বাগত জানানোর জন্য পশ্চিমবঙ্গ নাগরিক সমাজ অভিনব ভাবে সকলকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে। কলকাতার ঐতিহ্যপূর্ণ কফি হাউসে পশ্চিমবঙ্গ নাগরিক সমাজ এর কর্ণধার চন্দ্রনাথ বসু, লাল হালখাতা দিয়ে হালখাতার আমন্ত্রণ জানালেন। বিশ্বায়নের দৌলতে ডিজিটালাইজেশন এর বদান্যতায় হালখাতার জৌলুস অনেকটাই বিবর্ণ হয়ে গেছে।
এখন অধিকাংশ ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান email, whatsapp, বিভিন্ন অ্যাপস এর মাধ্যমে ক্রেতা সাধারণকে আমন্ত্রণ জানিয়ে থাকেন। মুঘল আমলে সম্রাট আকবর ও নবাব মুর্শিদকুলি খাঁ'র আমলে লাল রঙের খেরোর খাতা দিয়ে প্রজাদের নিমন্ত্রণ জানানো হতো। পহেলা বৈশাখ প্রজারা বাৎসরিক বকেয়া খাজনা তাদের অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখার জন্য যে কোন মূল্যে মিটিয়ে দিতেন। তখনকার দিনে হালখাতা ছিল আসলে রাজস্ব আদায়ের অপর এক নাম।
সেই রীতি মেনেই এখনো পুরনো বছরের হিসেব মিটিয়ে নতুন বছরে হিসেব লেখা শুরুর প্রচলন চলছে। হালখাতার দিন ব্যবসাদাররা লাল মোড়কের খাতা পুজো করেন, প্রথম পাতায় স্বস্তিক এঁকে শুরু হয় নতুন বছরের হালখাতা লেখা। পশ্চিমবঙ্গ নাগরিক সমাজের কর্ণধার চন্দ্রনাথ বসু বলেন, ঐতিহ্যপূর্ণ কফি হাউসে আসন্ন বাংলার নববর্ষের বার্তা দেওয়ার জন্য লাল রংয়ের হালখাতা দিয়ে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে। একই সঙ্গে সকলকে ঈদের শুভেচ্ছা জানানো হলো। বিশ্বায়নের যুগে লাল রংয়ের খেরোর খাতা প্রায় অবলুপ্তির পথে। অধিকাংশ ব্যবসাদাররাই খুব সস্তা পদ্ধতিতে লাল রঙের মলাট দিয়ে খরিদ্দারদের আমন্ত্রণ জানান। মিশ্র সংস্কৃতির ভিড়ে বাংলার অনেক কিছুই হারিয়ে যেতে বসেছে। বাংলার গৌরবকে স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
পশ্চিমবঙ্গ নাগরিক সমাজ পয়লা বৈশাখ কলকাতার বুকে নববর্ষকে স্বাগত জানানোর জন্য এক বর্ণময় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। বাবাসাহেব আম্বেদকর এর জন্মবার্ষিকীতে প্রকাশ পেতে চলেছে ডঃ সমরেন্দ্রনাথ ঘোষের বই হালখাতা। পরিধি ছাড়িয়ে... হালখাতা দিয়ে হালখাতার দিনে উপস্থিত হওয়ার জন্য চন্দ্রবাবু আমন্ত্রণ জানালেন বিশিষ্ট নজরুল গবেষক ড. দীপা দাস কে। একইসঙ্গে আমন্ত্রণ জানানো হয় তরুণ কবি তরুণ পাত্র, বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী আকাশ পাইন, সাহিত্য প্রেমী গোলাম মোস্তফা সহ বিশিষ্টজনদের।