Mission Army Academy
কর্মকেন্দ্রিক শিক্ষায় দুর্গাপুর মিশন আর্মি একাডেমীর অগ্রণী ভূমিকা নজর কাড়ছে
Bengal Times News, 9 March 2024
লুতুব আলি, দুর্গাপুর : জীবনমুখী কর্মকেন্দ্রিক শিক্ষা প্রসারে দুর্গাপুর মিশন আর্মি একাডেমীর অগ্রণী ভূমিকা নজর কাড়ছে। চাকরির মন্দা বাজারে শিক্ষিত বেকার ছেলেমেয়েদের সরাসরি আর্মির চাকরিতে অনুপ্রবেশ ঘটানোর কাজে এগিয়ে এসেছে দুর্গাপুরের অন্যতম দুর্গাপুর মিশন আর্মি একাডেমি। শিক্ষিত বেকার ছেলেমেয়েদের ও অভিভাবকদের অধিকাংশের ধারণা যে বিপথে টাকা না ছড়ালে চাকরিতে যাওয়া সম্ভব নয়। চাকরির প্রশিক্ষণ দেওয়ার নামে বেশিরভাগ সংস্থারই সুনাম থাকেনা। এই ধারণাকে পুরোপুরি মুছে দিয়ে এ ব্যাপারে এগিয়ে এসেছে দুর্গাপুর মিশন আর্মি একাডেমি। এই সংস্থার কর্ণধার আর্মির অবসরপ্রাপ্ত কর্মী রাম পরবেশ মাহাতো দুর্গাপুর বিধান নগরে গড়ে তুলেছেন দুর্গাপুর মিশন আর্মি একাডেমী।
যুব সমাজের প্রতি বীর সন্ন্যাসী বিবেকানন্দের বার্তা ছিল - ওঠো জাগো এবং লক্ষ্যে না পৌঁছানো পর্যন্ত থেমো না। দুর্গাপুর মিশন আর্মি একাডেমী স্বামী বিবেকানন্দের সেই বাণীকে সামনে রেখে এগিয়ে চলেছে এবং যুব সমাজের সৈনিক হওয়ার স্বপ্ন পূরণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছে। অবসরপ্রাপ্ত এই সৈনিক রাম পরবেশ মাহাতো ও তাঁর সহযোগী বাপি নন্দী, সুমন মুখার্জী, আস্তিক মন্ডলদের কয়েক বছরের কঠোর পরিশ্রমের ফলস্বরূপ বেশ কিছু যুবক যুবতী আজ সামরিক বাহিনীতে কর্মে যোগদান করেছে। দুর্গাপুর কুঠির গেস্ট হাউসে চাকরিতে যোগদান করা এই সমস্ত ছেলেমেয়েদের নিয়ে তাদের সম্বর্ধনা জ্ঞাপন অনুষ্ঠান হল। দুর্গাপুর মিশন আর্মি একাডেমি থেকে তারা প্রায় বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ নিয়ে সরাসরি আর্মির চাকরিতে যোগদান করেছেন। তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বাঁকুড়ার পলাশ কুমার দে। এই একাডেমিতে গ্রাম বাংলার বিভিন্ন প্রান্তের যুবক-যুবতীরা কায়িক, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার প্রস্তুতি নেন চাকরির পরীক্ষার জন্য। বর্তমানে চাকরির বাজারের অবস্থা খুবই খারাপ। দিশাহীন যুবক যুবতীদের এক আলোর দিশা দেখাচ্ছে দুর্গাপুর মিশন আর্মি একাডেমি।
এই একাডেমি প্রতিষ্ঠা হয় ২০১৯-২০ বর্ষে। এ ব্যাপারে রাম পরবেশ মাহাতো বলেন, আমি দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করতাম। কঠোর অনুশীলনের মাধ্যমে এবং সংগ্রামের মাধ্যমে আর্মির চাকরিতে যোগদান করি। চাকরিতে যোগদানের পর আর্থিক ও সামাজিক দিক থেকে মর্যাদা পাই। আর্মিতে চাকরি করতে করতে দিশাহীন শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতীদের তরুণ মুখগুলি উপলব্ধি করতাম। জম্মু-কাশ্মীর সহ ভারতবর্ষের বিভিন্ন রাজ্যে চাকরিতে ঘুরে বাইশ বছর চাকরি করার পর অবসর গ্রহণ করি। অবসর গ্রহণ করার পর আমার মনের মধ্যে তিল তিল করে গড়ে ওঠা মনের বাসনাকে বাস্তবে রূপ দেওয়ার জন্য দুর্গাপুর বিধান নগরে দুর্গাপুর মিশন আর্মি একাডেমি গড়ে তুলি। একক প্রচেষ্টায় এই কাজে আত্মনিয়োগ করি।
পরবর্তীতে অনেক শুভানুধ্যায়ীরা আমার এই সংস্থাকে আক্ষরিকভাবে বাস্তবে রূপ দিতে, তারা সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন। ছেলেমেয়েরা এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে চাকরি পাওয়ার পর তারা আমাদের দুহাত তুলে আশীর্বাদ জানান। দুর্গাপুর মিশন আর্মি একাডেমীর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এখান থেকে পাস করার পর অধিকাংশ ছেলেমেয়েরা এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকতার কাজে যুক্ত হন। প্রশিক্ষণ ও শিক্ষকতার বাস্তব অভিজ্ঞতা তাদের চাকরির ক্ষেত্রে যাওয়ার পথ আরও মসৃণ হয়ে যায়। রাম পরবেশ মাহাতোর দাবি একাগ্রতা, একনিষ্ঠ ও নিয়মানুবর্তিতা থাকলে যেকোনো পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করা যায়। তাই বলা যায় আর্মির চাকরিতে যাওয়ার সরাসরি মাধ্যম হলো দুর্গাপুর মিশন আর্মি একাডেমি। সংবর্ধনা জ্ঞাপন অনুষ্ঠানে অতিথিরা এই সংস্থার ভূয়সী প্রশংসা করার পাশাপাশি একাডেমির আরও উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেন।