Trade Union
রাজ্যের ট্রেড ইউনিয়ন কো-অর্ডিনেশন সেন্টারের উদ্যোগে কনভেনশন
Bengal Times News, 19 December 2023
লুতুব আলি, কলকাতা : রাজ্যের ট্রেড ইউনিয়ন কো-অর্ডিনেশন সেন্টারের উদ্যোগে কলকাতা মৌলালি যুবকেন্দ্রে দক্ষিণবঙ্গ কনভেনশন অনুষ্ঠিত হয়। ১৮ ডিসেম্বর এই কনভেনশনের উদ্বোধন করেন রাজ্যের আইন ও শ্রম দপ্তরের মন্ত্রী মলয় ঘটক। অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন সংগঠনের রাজ্য সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। পৌরহিত্য করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এসপি তেওয়ারি। মৌলালি যুব কেন্দ্রের বিবেকানন্দ অডিটোরিয়ামে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সংগঠিত ও অসংগঠিত শ্রমিক ও তাদের প্রতিনিধিরা এই কনভেনশনে যোগদান করেন। কনভেনশনের উদ্বোধন করে শ্রম মন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচেষ্টায় অসংগঠিত ক্ষেত্রে শ্রমিকদের বিশেষ সম্মান প্রদর্শন করা হয়েছে। এই শ্রেণীর শ্রমিকদের কোন টাকা দিতে হয় না, রাজ্য সরকার সমস্ত দায়িত্ব নিয়েছে। ডোমেস্টিক ওয়ার্কারদের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারকে এ ব্যাপারে আলাদা একটি নির্ধারণ করতে হবে। ইএসআই ও কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন এক্ষেত্রে ও শ্রমিকদের সার্বিক স্বার্থ দেখতে কেন্দ্রীয় সরকারকে অগ্রনী ভূমিকা নিতে হবে। রাজ্য সরকার চায় সমস্ত শ্রমিকদের স্বার্থ সুরক্ষা করা। সংগঠনের রাজ্য সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চক্রবর্তী এই প্রতিবেদককে জানান, দেশের শ্রমিকদের উন্নয়ন না ঘটলে রাষ্ট্র দুর্বল হয়ে পড়বে।
শ্রমিকদের স্বার্থ সুরক্ষার ব্যাপারে ট্রেড ইউনিয়ন কর্ডিনেশন সেন্টার রাজ্য কমিটি সমগ্র রাজ্যের প্রতিটি জেলায় জেলায় শাসকদের মাধ্যমে শ্রমিক স্বার্থ সুরক্ষার ব্যাপারে গণডেপুটেশন প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো হবে। এই কর্মসূচি সারা ভারত বর্ষ জুড়ে শুরু হচ্ছে। দক্ষিণবঙ্গ কনভেনশনে যে ১৫ দফা দাবিগুলি নিয়ে উত্থাপন করা হয় সেগুলি হল: রাজ্যের জুট মিলের শ্রমিকদের দাবী সনদ বিগত এক বছর ধরে মীমাংসা হয়নি। সরকারের কাছে আমাদের দাবি যে এই দাবি সনদ অবিলম্বে মীমাংসা করতে হবে। চা শ্রমিকদের, বিড়ি শ্রমিকসহ অন্যান্য অসংগঠিত ক্ষেত্রে যে সমস্ত শ্রমিকরা এখনো ইএসআইয়ের আওতায় আসেনি তাদের অবিলম্বে এই আওতাভুক্ত করতে হবে। বন্ধু চা বাগান অবিলম্বে চালু করতে হবে। নির্মাণ শ্রমিকদের অনলাইন রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া সফল করতে হবে এবং ৬০ বৎসর বয়স হলে নূন্যতম তিন হাজার টাকা পেনশন দিতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকারকে অসংগঠিত শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তার জন্য তহবিল গঠন করতে হবে এবং ই-শ্রমিক পোর্টালে নথিভূক্ত শ্রমিকদের সামাজিক নিরাপত্তায় আনতে হবে। গৃহ পরিচারিকারদের শ্রমিকের মর্যাদা দিতে হবে এবং তাদেরকে সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় আনতে হবে, যাবতীয় খরচ রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারকে বহন করতে হবে। বিনোদন কর্মীদের শ্রমিকের মর্যাদা দিতে হবে এবং সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় এনে সমস্ত সুযোগ-সুবিধা প্রদান করতে হবে। সরকারি ও বেসরকারি সমস্ত আইয়াদের স্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে এবং ন্যূনতম বেতনের আওতায় এনে পিএফ এবং ই এস আই এর আওতায় আনতে হবে। এছাড়াও হকার, বেসরকারি পরিবহন শ্রমিক কর্মচারীদের সামাজিক সুরক্ষা, মৎস্য চাষীদের, ইটভাটা শ্রমিক, পরিযায়ী শ্রমিকদের পরিচয় পত্র প্রদান ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে হবে। এই কনভেনশনে যে সমস্ত শ্রমিক আন্দোলনের নেতৃত্বরা উপস্থিত ছিলেন তারা হলেন রাজেশ জয় সাওয়ার, অভয় শর্মা, মহিদুল ইসলাম, আম্বিয়া হোসেন, রত্না রায়, প্রদীপ দত্ত, রথীন চক্রবর্তী, রমা দেবনাথ প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন রুপা চক্রবর্তী খান।