Social activist
সেবার অঙ্গনে উজ্জ্বল নক্ষত্র অসিত চ্যাটার্জী
Bengal Times News, 30 September 2023
লুতুব আলি, মন্তেশর : সমাজ সেবায় নিবেদিত প্রাণ পূর্ব বর্ধমান জেলার মন্তেশ্বরের কালুই গ্রামের ভূমিপুত্র অসিতকুমার চ্যাটার্জী। দীর্ঘ ৩৫ বছর ধরে তিনি আর্ত, নিপীড়িত, হত দরিদ্রদের নীরবে, নিভৃতে সেবা করে আসছেন। তিন দশকের ওপর আসিতবাবু একক প্রচেষ্টায় একশো জোড়া হবু দম্পত্তির বিয়ে ও একই দিনে একশো জনের উপনয়ন দিয়ে আসছেন। হিন্দু মুসলমান, শিখ, খ্রিস্টান বিভিন্ন সম্প্রদায়ের বর-কনে হলে তাদের রীতি মেনেই সমস্ত রকমের বিয়ের আসর বসান।
বর ও কনে যাত্রীদের নিজের খরচে খাওয়া দাওয়া আপ্যায়নের পাশাপাশি সোনা দানা, খাট বিছানা বর কনেদের বিয়ের সাজে সমস্ত রকমের ব্যবস্থা করা হয়। ২০২৩ সালের গণবিবাহ ও উপনয়নের জন্য সমস্ত রকমের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বিশিষ্ট সমাজসেবী, মোহনবাগান ক্লাবের সহ-সভাপতি অসিতকুমার চ্যাটার্জী সমগ্র বাংলা তথা দেশের মধ্যে এক উজ্জ্বল ব্যক্তিত্ব বলে অনেকে মনে করেন। হিন্দু-মুসলমান সমস্ত ধর্মের প্রতি তিনি শ্রদ্ধাবনত চিত্তে সকলকে তিনি সমানভাবে সম্মান প্রদর্শন করেন। অসিত বাবু সম্প্রতি আজমীর শরীফে গিয়ে চাদর চড়িয়ে এসেছেন। তাঁর শরীরের জটিল অস্ত্রোপচার করার আগে মাজারে গিয়েছিলেন। অস্ত্রোপচার সফল হয়েছে। তিনি নিয়মিত ফুরফুরা শরীফে জান। ধর্মপ্রাণ মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরা অসিত বাবুকে সাদরে গ্রহণ করেন। তিনি বর্ধমান সহ হাওড়া ও অন্যান্য জেলার অনেক মসজিদ, মাদ্রাসার পরিচালন কমিটির সঙ্গেও যুক্ত আছেন। হিন্দু ধর্মের প্রতিও তাঁর অগাধ আস্থা। মসজিদ নির্মাণের পাশাপাশি মন্দির নির্মাণেও তিনি এগিয়ে আসেন।
শারদীয়া দুর্গাপূজার সময় তিনি লরি লরি নতুন জামা কাপড় দুস্থদের মধ্যে দান করেন। অসহায় মানুষদের কাছে তিনি ভগবান। উল্লেখ্য, করোনা কালে সকলে কাজ হারালে এক চরম সংকট তৈরি হয়। এই সময় তিনি দু'বেলা শত শত মানুষকে বিনামূল্যে রান্না করে খাওয়ানোর ব্যবস্থা করেছিলেন। তিন দশকের ওপর প্রতি সপ্তাহে শত শত মানুষদের বিনামূল্যে রেশন দেন। তিনি মন্তেশ্বরের কালুই গ্রামে তিন কন্যা পার্ক গড়েছেন। গাছ গাছালি দিয়ে ঘেরা এই পার্কটিকে প্রদর্শন করতে প্রতিদিন এলাকার ও বাইরের মানুষেরা এসে ভিড় জমান। ২০০৪ সালের ৪ মার্চ তিন কন্যা পার্ক উদ্বোধনে হাজির ছিলেন দেশের তিনজন পদ্মশ্রী প্রাপক খেলোয়াড় চুনি গোস্বামী, শৈলেন মান্না, পি.কে ব্যানার্জি সহ সুব্রত ভট্টাচার্য, মানস ভট্টাচার্য, বিদেশ বোস, প্রশান্ত ব্যানার্জীর মতো বিখ্যাত খেলোয়াড়রা। এই পার্কের মধ্যে খেলার মাঠ এলাকায় খেলাধুলার প্রসার ঘটাতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়াও এখানে একাধিক সামাজিক অনুষ্ঠান হয়। সমস্ত অনুষ্ঠানই অসিত বাবুর সৌজন্যে হয়ে থাকে। এলাকায় ও অন্যান্য জেলায় তিনি একাধিক সামাজিক কাজের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত আছেন। এলাকায় ফুটবল খেলার প্রসার ঘটানোর সঙ্গে সঙ্গে ভারতের অন্যতম ফুটবল দল মোহনবাগান ক্লাবের কর্মকর্তাদের মধ্যে তিনি অন্যতম। স্বল্পভাষী, ঋজু অসিত বাবু এক সাক্ষাৎকারে এই প্রতিবেদককে বলেন, মানুষের মধ্যেই ভগবান বিরাজ করেন। যতদিন বেঁচে থাকব মানুষের মধ্যেই বেঁচে থাকতে চাই।