Buddha Purnima
বুদ্ধ পূর্ণিমাতে
🔵 কৃষ্ণেন্দু কুমার মণ্ডল
আমার প্রশ্ন শুনে
চাঁদ একটু হাসলো।
আমি বললাম-
জানো, আমার কষ্ট হয়
যখন দেখি চারিদিকে
এত ঘৃণা, এত মারামারি, এত রক্তপাত।
জানো, আমি তাজ্জব হই
যখন দেখি
বুদ্ধ পূর্ণিমার দিনে
বুদ্ধ কে প্রণাম জানায়
হিংসার সাধক সকল।
তারা কালও
পৃথিবীটাকে আরেকটু হিংস্র করেছিল,
তারা কালও
পৃথিবীটাকে আরেকটু হিংস্র করবে।
আমার কথা শুনে
চাঁদ আবারও হাসলো।
আমি ফিরে যাই
আবার প্রথম প্রশ্নে-
কেমন দেখেছিলে তুমি বুদ্ধ কে?
আমি সাক্ষী
মানব সভ্যতার বিবর্তনের-
চাঁদ বলতে শুরু করলো।
আমি সাক্ষী-
এই পূর্ণিমাতে গৌতমের জন্মের।
আমি সাক্ষী-
এই পূর্ণিমাতে সিদ্ধার্থের বোধিসত্ত্ব লাভের।
আমি সাক্ষী-
এই পূর্ণিমাতে তথাগতের মহাপরিনির্বাণের।
এবার তোমায় প্রশ্ন করি-
বললো চাঁদ-
হানাহানি কি হয়নি
বলো, বুদ্ধের সময়?
অজাতশত্রু করেনি কি হত্যা নিজ পিতাকে?
দেবদত্ত কি করেনি চেষ্টা
মারতে স্বয়ং বুদ্ধকে?
নিরুত্তর আমি।
চাঁদ বললো আবার-
শুধু তাই নয়-
সেকালেও ক্ষমতাবানেরা
অত্যাচার করেছে অন্যদের।
সেকালেও বিদুদভ
হত্যা করে শতশত শাক্যের।
ভালো-মন্দ
শুধু বর্তমানের বিষয় নয়।
তা ছিল অতীতে
তা থাকবে ভবিষ্যতে।
কিছু লোক থাকবে-
যারা করবে পৃথিবীটাকে
আরো কষ্টকর,
আরো ভয়ঙ্কর।
আর সেখানেই তো প্রয়োজন
বুদ্ধের।
আমাকে দেখো-
নিয়ম করে
অমাবস্যা গ্রাস করে আমায়
প্রতি মাসে।
তবে আবার আমি
হেসে উঠি প্রতি পূর্ণিমায়
যেমন হাসছি আজ বুদ্ধপূর্ণিমায়।
সেই আড়াই হাজার বছর আগে-
চারিদিকে হানাহানির, কাটাকাটির মাঝে
বুদ্ধ শুনিয়েছেন প্রেমের বাণী।
আমি সাক্ষী-
সে বাণী মানুষের মুখে মুখে
বয়ে চলে-
দেশ থেকে দেশান্তরে
প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে।
'মারা' শুধু বুদ্ধের সময়ে নয়-
অশুভ শক্তি থাকে
সবসময়-
অতীতে, বর্তমানে ও ভবিষ্যতে।
তাই চিন্তা করোনা-
তাদের কাজ তারা করবেই।
তোমরা শুনিয়ে যাও
বুদ্ধের বাণী, প্রেমের বাণী।
জেনে রেখো,
বুদ্ধ ছিলেন,
বুদ্ধ আছেন,
বুদ্ধ থাকবেন,
বুদ্ধ চিরন্তন।
আমি বলে উঠি
আমি তো নশ্বর,
তাই একদিন চলে যাবো
পৃথিবী ছেড়ে।
চাঁদ, তুমি তো থাকবে-
তাই শুনিয়ে যেও
বুদ্ধের বাণী, প্রেমের বাণী-
আগামী প্রজন্মকে।
বলো তাদের
ভালো থাকতে
ভালোবাসতে।
নিয়ে এসো
বুদ্ধকে তাদের কাছে
প্রতি বুদ্ধ পূর্ণিমা তে।
লেখক : মহকুমা শাসক, বর্ধমান সদর দক্ষিণ।