Pallikabi Kumud Ranjan Mallick
পল্লীকবির ১৪১তম জন্মবার্ষিকীতে সমারোহে আয়োজিত হলো কুমুদ সাহিত্য মেলা
Bengal Times News, 5 March 2023
অভিরূপ আচার্য, মঙ্গলকোট : পল্লীকবি কুমুদ রঞ্জন মল্লিক এর বসতভিটে মঙ্গলকোটের কোগ্রামের মধুকর প্রাঙ্গণ। গত ১৩ বছর ধরে ৩ মার্চ এই মধুকর প্রাঙ্গণে আয়োজিত হয় কুমুদ সাহিত্য মেলা। এবছরও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। কুমুদ সাহিত্য মেলা কমিটির উদ্যোগে পল্লীকবির ১৪১তম জন্মবার্ষিকীতে এবছর ৩ মার্চ মেলার উদ্বোধন করেন বার কাউন্সিল অফ ওয়েস্ট বেঙ্গলের কার্যনির্বাহী চেয়ারম্যান শ্যামল ঘটক। মেলায় প্রধান বক্তা ছিলেন রাজ্য সংখ্যালঘু কমিশনের চেয়ারপার্সন মমতাজ সংঘমিত্রা চৌধুরী। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের এজিপি আনসার মণ্ডল। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিধান শিশু উদ্যানের সম্পাদক গৌতম তালুকদার ও সুপ্রিম কোর্ট এবং কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবী বৈদূর্য ঘোষাল। কবিপ্রণাম, পত্রিকা ও বই প্রকাশের পাশাপাশি আবৃত্তি, সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে মুখরিত হয়ে ওঠে মধুকর প্রাঙ্গণ।
কুমুদ সাহিত্য মেলা কমিটির তরফে এবছর ক্রাইম থ্রিলার লেখক ও কলকাতা হাইকোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায়কে 'কুমুদ সাহিত্য রত্ন' সম্মানে ভূষিত করা হয়। প্রয়াত বিচারক মোল্লা নূরুল হোদার স্মৃতিতে 'নূরুল হোদা রত্ন' সম্মান প্রদান করা হয় কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবী শীর্ষেন্দু সিংহরায়-কে। বাংলাদেশের যশোহর থেকে আসা কবি কাজী নূরকে 'হাসান আজিজুল হক রত্ন' সম্মানে সম্মানিত করা হয়। আইনজীবী মুকুল বিশ্বাস, পল্লব চট্টোপাধ্যায়, ছড়াকার তপনকুমার বৈরাগ্য, চিকিৎসক প্রণয় ঘোষ, সমাজসেবী বিশ্বনাথ রায়।
সাংবাদিক জগন্নাথ ভৌমিক - কে বর্ধমানের দৈনিক মুক্তবাংলা পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা পুরুষোত্তম সামন্ত স্মারক সম্মানে সম্মানিত করা হয়। এছাড়াও সাংবাদিক প্রদীপ মুখোপাধ্যায় ও আনোয়ারুল আজিমকেও সংবর্ধনা জানানো হয়েছে। সমগ্র অনুষ্ঠানটি উপস্থাপনা করেন সমাজকর্মী ও সাংবাদিক মোল্লা শফিকুল ইসলাম (দুলাল) ও শ্যামলাল মকদমপুরী।
অনুষ্ঠানে বিশিষ্ট অতিথি ছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবী মাসুদ করীম, সিটি সেশন কোর্টের আইনজীবী অলোককুমার দাস, মঙ্গলকোট থানার আইসি পিন্টু মুখার্জি, চিত্রপরিচালক ও সাংবাদিক ফিরোজ হোসেন, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়, বাচিক শিল্পী অন্তরা সিংহরায় ও দেবিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই সাহিত্য মজলিসে হাজির ছিলেন পল্লিকবি কুমুদরঞ্জন মল্লিকের নাতনি তথা সাহিত্যিক মহাশ্বেতা বন্দ্যোপাধ্যায়, বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের ভাইপো রেজাউল করিম ও কবির নাতনি তথা সঙ্গীত শিল্পী সোনালী কাজী। ছিলেন রাজা রামমোহন রায়ের বংশধর ও সঙ্গীতশিল্পী ড. রজতমোহন রায়।
মেলা চলার সময় আন্তর্জাতিক চিত্রশিল্পী দীপঙ্কর সমাদ্দার ও বিশ্বনাথ দাস বিভিন্ন আঙ্গিকে ছবি আঁকেন। বিশেষত পল্লিকবিকে নিয়েও ছবি আঁকেন। শুধু পূর্ব বর্ধমান জেলা নয়, পশ্চিম বর্ধমান, হাওড়া, বীরভূম, কলকাতা ও নদিয়া এমনকি বাংলাদেশের যশোহর এলাকা থেকে শতাধিক কবি, সাহিত্যিক এবং সাংবাদিক এসেছিলেন। মেলায় আগত সকল অতিথিকে স্মারক মেমেন্টো দিয়ে সম্মানিত করা হয়।
কুমুদ সাহিত্য মেলার সম্পাদক মোল্লা জসিমউদ্দিন সকলকে আন্তরিক ভাবে স্বাগত জানান। তিনি বলেন, ‘পল্লিকবি কুমুদরঞ্জন মল্লিকের জন্মদিন উপলক্ষে মঙ্গলকোটের কোগ্রামে কবির বাস ভবন প্রাঙ্গণে প্রতি বছরই এই সাহিত্য মেলা আয়োজিত হয়। তবে সরকারি সহযোগিতা পেলে আরও বড়ো আকারে এই মেলা করা যেতে পারে। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে অনেক অতিথি পল্লী কবি কুমুদ রঞ্জন মল্লিকের বসতভিটে প্রাঙ্গণে স্থায়িমঞ্চ ও এলাকা সাজিয়ে তোলার কথা বলেন, অবশ্য সকলেই বলেন সরকারি সহযোগিতা থাকলে সব কিছুই সহজে করা সম্ভব।