SCROLL

২০২৫ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যে প্রথম রায়গঞ্জের করোনেশন হাইস্কুলের অদৃত সরকার। প্রাপ্ত নম্বর ৬৯৬ নম্বর # সুপ্রিম রায়ে যোগ্য শিক্ষকদের আপাতত চাকরি বহাল # সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ২৫ হাজার ৭৫২ জন শিক্ষকের চাকরি গেল # আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি বিজয়ী ভারত, নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে তৃতীয় বারের জন্য চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি চ্যাম্পিয়ন হল ভারত # পশ্চিমবঙ্গ থেকে ১১ জন পদ্ম সম্মানে ভূষিত # ৪৭ তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প # একদিনের ক্রিকেটে পুরুষদের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড ভাঙলেন ভারতীয় দলের মেয়েরা # ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং প্রয়াত, মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯২ বছর # পূর্ব বর্ধমানে প্রথম সজল গ্রাম পঞ্চায়েতের স্বীকৃতি পেল জামালপুরের আবুইঝাটি ২ পঞ্চায়েত # দাদাসাহেব ফালকে' সম্মানে ভূষিত হলেন অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী # প্যারিস অলিম্পিকে জোড়া পদক জিতে ইতিহাস গড়লেন মনু ভাকের # নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রীসভায় পশ্চিমবঙ্গ থেকে শপথ নিলেন ডঃ সুকান্ত মজুমদার ও শান্তনু ঠাকুর # আঠারো তম লোকসভা ভোটের ফলাফল : মোট আসন ৫৪৩টি। NDA - 292, INDIA - 234, Others : 17 # পশ্চিমবঙ্গে ভোটের ফলাফল : তৃণমূল কংগ্রেস - ২৯, বিজেপি - ১২, কংগ্রেস - ১ # ভূমিকম্পের এ্যালার্ট দেবে "ভূদেব" অ্যাপ, আই আই টি'র বিজ্ঞানীদের বিরাট সাফল্য

Kreta Suraksha Mela দক্ষিণবঙ্গের পাঁচটি জেলা নিয়ে তিন দিন ব্যাপী বর্ধমানে জমজমাট ক্রেতা সুরক্ষা মেলা


 

Kreta Suraksha Mela


দক্ষিণবঙ্গের পাঁচটি জেলা নিয়ে তিন দিন ব্যাপী বর্ধমানে জমজমাট ক্রেতা সুরক্ষা মেলা 




Jagannath Bhoumick 
Bengal Times News, 29 November 2024

জগন্নাথ ভৌমিক, বর্ধমান : দক্ষিণবঙ্গে প্রথম ক্রেতা সুরক্ষা মেলা আয়োজিত হচ্ছে শহর বর্ধমানের বীরহাটা উৎসব ময়দানে। উপভোক্তা সচেতনতা প্রসারের উদ্দেশ্যে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উপভোক্তা বিষয়ক দপ্তর দক্ষিণবঙ্গের পাঁচটি জেলা নিয়ে তিন দিন ব্যাপী এই মেলার আয়োজন করেছে। শুক্রবার প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মাধ্যমে মেলার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয়। 

উপস্থিত ছিলেন পশ্চিমবঙ্গ সরকারের উপভোক্তা বিষয়ক দপ্তরের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র, প্রাণী সম্পদ বিকাশ দপ্তরের মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ, উপভোক্তা বিষয়ক দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রীকান্ত মাহাতো, খাদ্য দপ্তরের রাষ্ট্রমন্ত্রী জোৎস্না মান্ডী, পূর্ব বর্ধমান জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি গার্গী নাহা, জেলা শাসক আয়েশা রাণী এ, পুলিশ সুপার সায়ক দাস, পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের সহকারী সভাধিপতি বিশ্বদেব নুনিয়া, বিধায়ক খোকন দাস, শম্পা ধাড়া, বর্ধমান পৌরসভার চেয়ারম্যান পরেশ চন্দ্র সরকার, উপভোক্তা বিষয়ক দপ্তরের বিশেষ সচিব তীর্থঙ্কর হালদার, বিশেষ সচিব রুমেলা দে, উপভোক্তা বিষয়ক দপ্তরের অধিকর্তা প্রিয়দর্শিনী এস সহ জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা এবং জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ, পৌরসভার কাউন্সিলর ও অন্যান্যরা। 

উদ্বোধকের ভাষণে উপভোক্তা বিষয়ক দপ্তরের মন্ত্রী বিপ্লব মিত্র বলেন, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরণায় উপভোক্তা বিষয়ক দপ্তর প্রতি বছর ক্রেতা সুরক্ষা মেলার আয়োজন করে থাকে। এই বছর কলকাতা ছাড়াও জেলায় দুটি, অর্থাৎ মোট তিনটি ক্রেতা সুরক্ষা মেলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে-পূর্ব বর্ধমান, কলকাতা ও মালদায়। শেষ পর্যায়ে মালদায় মেলা আয়োজিত হবে। পূর্ব বর্ধমানে ২৯ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ক্রেতা সুরক্ষা মেলা অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বক্তব্যে ক্রেতা সুরক্ষার বিষয়টি প্রাণ জল ভাষায় তুলে ধরেন। 

এছাড়া এদিন এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে উপভোক্তাবান্ধব বিভিন্ন বিধি অনুসারে উপভেক্তা সচেতনতার প্রসার ঘটানো এবং উপভোক্তার প্রাপ্য অধিকারগুলি রক্ষা করাই 'ক্রেতা সুরক্ষা মেলা'র উদ্দেশ্য। এই মেলায় উপভোক্তা সুরক্ষা আইন, ২০১৯-এর প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি, বর্তমানে ডিজিটাল যুগে উপভোক্তার সুরক্ষা, অন্যায্য বাণিজ্যের অবসান এবং ক্রেতার অভিযোগ নিরসনের উপায়গুলি জনসাধারণ তথ্য উপভোক্তাদের সামনে তুলে ধরা হবে। উপভোক্তা অধিকার আন্দোলনের বিভিন্ন স্তরের অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে সমন্বয় সাধনের জন্য একটি কার্যকরী মাধ্যম হল এই মেলা।

বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, সরকারি সংস্থা এবং অনেক বেসরকারি সংস্থাও এই মেলায় অংশগ্রহণ করেছে। মেলায় সব মিলিয়ে ৬৫টি স্টলের প্রদর্শনীর ব্যবস্থা করা হয়েছে। যেহেতু উপভোক্তা বিষয়ক দপ্তর পশ্চিমবঙ্গ জনপরিষেবা অধিকার আইন, ২০১৩ রূপায়ণের নোডাল দপ্তর হিসেবেও দায়িত্বপ্রাপ্ত, তাই এই বিষয়টিও মেলায় গুরুত্ব পাবে। এই দপ্তরের আরেকটি শাখা বৈধ পরিমাপ অধিকারের বিভিন্ন কাজও মেলায় প্রদর্শিত হচ্ছে। একটি 'কারিগরী হাট' এবং একটি 'মিষ্টি হাব' এই মেলার অতিরিক্ত আকর্ষণ।

পশ্চিমবঙ্গ সরকরের উপভোক্তা বিষয় দপ্তর রাজ্য জুড়ে জনসাধারণের মধ্যে উপভোক্তা সচেতনতার প্রসার এবং তাদের উপভোক্তা সুরক্ষা আইনে প্রদত্ত অধিকারসমূহ প্রয়োগের ব্যাপারে সক্ষম করে তোলার জন্য একেবারে রাজ্যের সুদূরতম প্রান্তিক এলাকা পর্যন্ত নানাবিধ গুরুত্ব কর্মসূচী গ্রহণ করেছে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত উপভোক্তা যাতে দ্রুত এবং সহজে সুরাহা লাভ করতে পারেন, এবং অন্যায্য বাণিজ্য যাতে রোধ করা যায়, সে ব্যাপারেও নানা উদ্যোগ গ্রহণ করে চলেছে। ছাত্রছাত্রীরা, যারা আগামী দিনের উপভোক্তা, তাদের মধ্যে উপভোক্তা সচেতনতার প্রসার ঘটানোর উদ্দেশ্যে উপভোক্তা বিষয়ক দপ্তর সারা রাজ্যে বিভিন্ন বিদ্যালয় এবং কলেজে 'উপভোক্তা সংঘ' গড়ে তুলেছে। বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতি মুহূর্তেই উন্নততর হয়ে উঠছে। তাই এখন ডিজিটাল মাধ্যমে কেনাকাটার প্রবণতাও বেড়েছে, বিশেষ করে অতিমারী-পরবর্তী পৃথিবীতে এবং এহেন কেনাকাটা মানুষ সহজতর মনে করায়। বহুজাতিক সংস্থাগুলি ই-কমার্সের মাধ্যমে নানা পণ্য ও পরিষেবা ক্রেতাদের কাছে তুলে ধরছে এবং এক্ষেত্রে পুরো লেনদেনই ডিজিটাল মাধ্যমে হচ্ছে। কিন্তু অসাধু ব্যক্তিরা প্রযুক্তির নতুনতর পন্থা ব্যবহার করে উপভোক্তাদের ঠকানো শুরু করেছে। তাই এই সময়ে উপভোক্তারা ইলেক্ট্রনিক লেনদেনের ক্ষেত্রে কী সাবধানতা অবলম্বন করবেন, প্রতারণার শিকার হলে কার কাছে অভিযোগ জানাবেন এবং কী কী প্রতিকার পেতে পারেন এসব খুঁটিনাটি সম্পর্কে ওয়াব্বিহাল হওয়া দরকার। এই সচেতনতা প্রসার উপভোক্তা বিষয়ক দপ্তরের একটা বড়ো দায়িত্ব ও কর্তব্য।

২০২০ সালের ২০ জুলাই উপভোক্তা সুরক্ষা আইন, ২০১৯ সারা দেশজুড়ে কার্যকর করা হয়েছে। এই আইনে উপভোক্তাদের সুরক্ষার পরিধি আরও বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই আইন উপভোক্তা সুরক্ষা ও উপভোক্তা বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে যেমন উপভোক্তা কমিশনের আঞ্চলিক অধিক্ষেত্র এবং আর্থিক এক্তিয়ারের পরিমার্জন করা হয়েছে। অধিকতর শক্তিশালী ও যুগোপযোগী এই আইনে কয়েকটি নতুন বিষয় তুলে ধরা হয়েছে- যেমন মেডিয়েশন, ই-কর্মাস বিধি, প্রত্যক্ষ বিক্রয় বা ডাইরেক্ট সেলিং বিধি, সেন্ট্রাল কনজিউমার প্রোটেকশন অথরিটি ইত্যাদি।

বিগত কয়েক বছর ক্রমবর্ধমান উপভোক্তা বিরোধের অভিযোগ এবং সেগুলির নিষ্পত্তির নিরিখে সহজেই বলা যায় যে রাজ্যের উপভোক্তারা তাঁদের অধিকার সম্পর্কে ক্রমশ সচেতন হচ্ছেন এবং প্রতিকার দাবি করতে সক্ষম হয়ে উঠেছেন। উপভোক্তা বিষয়ক দপ্তর নিরলসভাবে উপভোক্তাদের, বিশেষ করে সমাজের দুর্বল এবং পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর মানুষকে নিজেদের অধিকার প্রয়োগের ব্যাপারে সক্ষম করে তোলার কাজ করে যাচ্ছে, যাতে তারা উপভোক্তাবান্ধব আইনের সুফল লাভ করতে পারেন। সাম্প্রতিক অতীতে এই দপ্তর উপভোক্তাদের স্বার্থ সুরক্ষিত করতে কিছু উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিয়েছে। যেমন ই-দাখিল পোর্টালের মাধ্যমে রাজ্য ও জেলা উপভোক্তা কমিশনে মামলা দাখিল করাকে অগ্রাধিকার দেওয়া, উপভোক্তা বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশনে ক্ষতিগ্রস্ত উপভোক্তাদের নিখরচায় মামলা দায়ের করতে এবং মামলা চালাতে সাহায্য করতে জেলায় উপভোক্তা সহায়তা ব্যুরো (Consumer Assistance Bureau) গঠন করা ইত্যাদি। বিধিবদ্ধ কনজিউমার কমিশনগুলির পাশাপাশি দপ্তরের সদর ও আঞ্চলিক কার্যালয়গুলিতে আপোস-মীমাংসার মাধ্যমে উপভোক্তা বিরোধ নিষ্পত্তির (Pre-litigation mediation) ব্যবস্থা রয়েছে। এই ব্যবস্থাটির মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্থ উপভোক্তারা দ্রুত ও সম্পূর্ণ নিখরচায় প্রতিকার পাচ্ছেন। দেশের মধ্যে এই রাজ্যেই এই অভিনব উপভোক্তা বিরোধ নিষ্পত্তির ব্যবস্থা রয়েছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad