স্টুডেন্ট ইসলামিক অর্গানাইজেশন অফ ইন্ডিয়ার বিশেষ উদ্যোগ
Bengal Times News, 27 May 2024
লুতুব আলি, বড়শুল : স্কুলগুলিতে এখন গ্রীষ্মকালীন বিশেষ ছুটি চলছে। ছাত্র-ছাত্রীরা করোনা কালে অনলাইনে ক্লাস করার সুযোগ পেয়েছিল। এখন গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে অধিকাংশ বিদ্যালয়গুলিতে অনলাইনে ক্লাস করার সুযোগ পাচ্ছে না। ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে বড় একটা ব্যবধানের সৃষ্টি হয়েছে। সামার স্কুল থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের শিষ্টাচার শেখানোর ব্যাপারে এগিয়ে এসেছে স্টুডেন্ট ইসলামিক অর্গানাইজেশন অফ ইন্ডিয়া। এই ব্যাপারে সহায়তা করে চলেছে জামায়াত ইসলামী হিন্দ। ২৬ মে বড়শুল ইউনিটের পক্ষ থেকে মুজিবর রহমানের তত্ত্বাবধানে এবং ইউনিটের অন্যান্য সদস্য রবিউল ইসলাম, সাহিবুল, একলাখ হোসেন আনসারী প্রমুখদের সক্রিয় সহযোগিতায় এদিন তাঁতখন্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের শিষ্টাচার শেখানোর উপর পাঠ দেওয়া হয়।
এই কর্মশালা দুদিন ধরে অনুষ্ঠিত হয়। বড়শুল এলাকার বিভিন্ন গ্রাম থেকে শতাধিক ছাত্র-ছাত্রী এই সামার স্কুলে হাতে-কলমে পাঠদান গ্রহণ করল। এই সামার স্কুলে প্রশিক্ষকরা আশঙ্কা করেন বিশ্বায়নের প্রভাবে সামাজিক জনজীবন অনেক ক্ষেত্রে বিনষ্ট হতে বসেছে। অন্যদিকে বিশ্বায়নের ইতিবাচক দিকগুলির প্রভাবে উন্নততর ব্যবস্থাপনা পরিলক্ষিতও হয়। ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুল জীবন হল চারিত্রিক গঠনে অন্যতম পর্যায়। এই পর্যায়টিকে ব্যবহার করে ছাত্র-ছাত্রীদের ব্যবহারিক চরিত্র গঠনের দিকগুলি নিয়ে ধারাবাহিকভাবে আলাপ-আলোচনা করতে থাকলে এই সামার স্কুলের লক্ষ্য অনেকাংশে সফলতা লাভ করবে বলে অনেকে মনে করছেন। সমাজে সহযোগিতা, সহমর্মিতা, সহনশীলতার অভাব লক্ষণীয়ভাবে ধরা পড়েছে। এই সংগঠনের বড়শুল ইউনিটের পুরোধা মুজিবর রহমান বলেন, ছাত্র-ছাত্রী, ছেলেমেয়েদের চরিত্র গঠন করতে পিতা-মাতা ও অভিভাবকদের ভূমিকাই বেশি থাকা উচিত। ছাত্র-ছাত্রীরা স্কুলে চার থেকে ছয় ঘন্টা থাকে। অধিকাংশ পিতা-মাতা ও অভিভাবকদের ধারণা স্কুলে পাঠালেই তাদের দায়িত্ব শেষ! একাডেমিক শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে সামাজিক শিক্ষা তথা মানুষের মতো মানুষ হওয়ার জন্য ছেলেমেয়েদের পাঠ দিতে হবে। সেটা বিদ্যালয় পরিবেশ ও বাড়ির পরিবেশে এবং সামাজিক পরিবেশে সমানভাবে দায়িত্ব ভার পালন করতে হবে।
দু'দিনের এই সামার স্কুলে লক্ষ্যনীয় ছিল কর্মশালার শেষে লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়। দুদিনের এই সামার স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের যা আলোচনা করা হয়েছিল তার ওপর সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন এই পরীক্ষায় করা হয়। সফল ছাত্র-ছাত্রীদের বিশেষভাবে পুরস্কৃত করা হয়। এছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের পুরস্কৃত করা হয়। কুইজ, গান, মননশীল আলোচনার মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীদের আকৃষ্ট করা হয়। এই সামার স্কুলে অন্যান্য বিশিষ্টজনদের মধ্যে ছিলেন বর্ধমান জামায়াতে ইসলামী হিন্দ এর ইনচার্জ তাহের উদ্দিন, হাফিজ আহমাদুল্লাহ প্রমুখ। সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয় প্রতিবছরই এই সামার স্কুলের ব্যবস্থা করা হয়। ছাত্র-ছাত্রী সহ অভিভাবকদের এবং এলাকার মানুষের ব্যাপক সাড়া পাওয়া গেছে । গ্রীষ্মাবকাশের ফাঁকে দুদিনের এই বৈচিত্র্যপূর্ণ সামার স্কুলে অংশগ্রহণ করতে পেরে ছাত্রছাত্রীরাও ভীষণ খুশি।