ষোলআনা বাঙালিয়ার মোড়কে বর্ণময় অনুষ্ঠান
Bengal Times News, 15 May 2024
লুতুব আলি, শিলিগুড়ি : ষোলআনা বাঙালিয়ানাতে নিমজ্জিত হয়ে বাঙালি ও বাঙালিয়ানার অগ্রদূত উত্তরবঙ্গের ভূমিপুত্র ফাঁসি দেওয়ার সমীর মুখার্জী নীরবে, নিভৃতে সাহিত্য সংস্কৃতি সাধনায় অবিচল। শিলিগুড়ি থেকে কুড়ি কিলোমিটার অদূরে প্রত্যন্ত ফাঁসি দেওয়া। এই এলাকা থেকে অভিষ্ঠ লক্ষ্যে অবিচল থেকে উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের দুটি হাত এক করে দিলেন সমীর মুখার্জী। বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৪ তম জন্মজয়ন্তীকে সমীরবাবু হাতিয়ার করে একটি বর্ণময় অনুষ্ঠান উপহার দিলেন। ফাঁসি দেওয়ার উচ্চতর বিদ্যালয়ের মঞ্চে রবি ঠাকুরকে একটু অন্যরকম ভাবে স্মরণ করলো বাঙালি ও বাঙালিয়ানা নামক সাহিত্য পত্রিকা ও পাঠাগার। বিকাল থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত টানা ৬ ঘন্টা ক্লান্তি বিহীন অনুষ্ঠান সকলের মনকে স্পর্শ করে দিল।
অনুষ্ঠানের নান্দনিক শুভ লগ্নে ফাঁসি দেওয়ার ওপর থিম সং পরিবেশন করেন কলকাতার বিশিষ্ট সংগীতশিল্পী মৌলিক গায়ক রনজিৎ ভট্টাচার্য। এই গানের রচয়িতা বাঙালি ও বাঙালি আনার প্রতিষ্ঠাতা তথা কর্ণধার সমীর মুখার্জী। অনুষ্ঠানের প্রথমার্ধে সন্ধ্যে সাতটা অবধি স্কুল ও কলেজের ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে রবীন্দ্র কবিতা, রবীন্দ্র সংগীত, রবীন্দ্র নৃত্য, রবীন্দ্রনাথের উপর মনন শীল বক্তব্যের প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। এই প্রতিযোগিতাগুলিতে যারা প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকার করেছিল তাদের প্রত্যেককেই ব্যাচ, উত্তরীয়, ফুল দিয়ে বরণ করা হয় ও শংসাপত্র দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের দ্বিতীয়ার্ধে সন্ধ্যে সাতটা থেকে রাত্রি দশটা পর্যন্ত বর্ণময় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে কবিতা, গান, আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। সমীর মুখার্জী এক সাক্ষাৎকারে বলেন, মহামারী করণাকালে ২০২০ সালের ৩০ মে বাঙালি ও বাঙালিয়ানাকে প্রতিষ্ঠা করা হয়। ফেসবুক পেজের মাধ্যমে এই সংগঠনটি হাজার হাজার মানুষের কাছে আমাদের বার্তা পৌঁছে যায়। ব্যাপক সাড়া মিলেছে। অনুষ্ঠানে বাঙালি ও বাঙালিয়ানা অনুগল্প সংকলন এর মোড়ক উন্মোচিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন শিশু সাহিত্যিক, আমার ভারত আন্তর্জাতিক পত্রিকার সম্পাদক আব্দুল করিম। এই অনুষ্ঠানে আরও এক বিশিষ্ট সাহিত্যিক সুনীল চক্রবর্তী উপস্থিত ছিলেন। দুজনেই বলেন, উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণ বঙ্গের সাহিত্য সংস্কৃতির মেলবন্ধন ঘটাতে সমীর মুখার্জী যে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছেন তা অত্যন্ত প্রশংসাযোগ্য। এখানকার আন্তরিকতা মনকে ছুঁয়ে যায়। এই অনুষ্ঠানের আরও এক আকর্ষণ ছিল ফাঁসি দেওয়া স্বাস্থ্য কেন্দ্রের যোগা প্রশিক্ষিকা জয়শ্রী দেব শর্মার সমবেত রবীন্দ্র নৃত্য সকলের নজর কাড়ে। অনুষ্ঠানে ক্রীড়াঙ্গন চ্যানেলও অংশগ্রহণ করে।
সংগঠনের পক্ষ থেকে মিতা সিনহা, সুব্রত সরকার প্রমুখ সকলকে সম্ভাষণ জানান। এই অনুষ্ঠানে যাঁদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল তাঁরা হলেন সঞ্চালক ও বাচিক শিল্পী নদীয়ার প্রদীপ কুমার দে, কোচবিহারের নৃত্যশিল্পী ও সংগীত বিশারদ প্রিয়াঙ্কা নিয়োগী, রানাঘাটের স্বর্ণপদক প্রাপ্ত বাচিক শিল্পী সুপ্রিয়া ঘোষ, বিশিষ্ট সাহিত্যিক দিলীপ চক্রবর্তী, জগবন্ধু আশ্রমের স্বামীজি শংকর মহারাজ প্রমুখ। অন্যান্যদের মধ্যে ছিলেন বাঙালি ও বাঙালিয়ানার পরিচালক মন্ডলী এডমিন মিতা সিনহা, সুব্রত সরকার, দুই বাংলার জনপ্রিয় লেখিকা তথা মডারেটর শবনম বসু, মডারেটর নন্দা ব্যানার্জী চক্রবর্তী, সঞ্চলিকা বহ্নিশ্রী মহন্ত, সঞ্চালক প্রদীপ কুমার দে, আলপনা সাহা, শিপ্রা সাহা প্রমুখ।