Jibanananda Das
কফি হাউসে কবি জীবনানন্দ দাশের ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী পালন
Bengal Times News, 18 February 2024
লুতুব আলি, কলকাতা : কলকাতার ঐতিহ্যবাহী কফি হাউসে চিরন্তন কবি জীবনানন্দ দাশের ১২৫ তম জন্মবার্ষিকী পালন করলো স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা স্বজন। জীবনানন্দ দাশের বহুমুখী প্রতিভাধর দিকগুলি নিয়ে আলোকপাত করেন স্বজনের সম্পাদক চন্দ্র নাথ বসু। জীবিত কালে জীবনানন্দ দাশ চরম আর্থিক অনটনকে সঙ্গে নিয়ে সাহিত্যচর্চা করে গেছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ গুলি হল রূপসী বাংলা, বনলতা সেন, মহাপৃথিবী, বেলা অবেলা, কালবেলা। ১৮৯৯ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ঊনবিংশ শতকের ইংরেজ ঔপনিবেশিক শক্তির অত্যাচার, পিছিয়ে পড়া ভারতের অবস্থা দেখে জীবানন্দ দাশ একপ্রকার হতাশ হয়ে গিয়েছিলেন। তিনি ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করলেও মাতৃভাষা বাংলার প্রতি তাঁর অমোঘ টান ছিল। শৈশব পেরিয়ে কৈশোর অবস্থা থেকে তিনি প্রকৃতির প্রেমে পড়ে যান। রবীন্দ্র, নজরুল উত্তর যুগের আধুনিক কবিদের মধ্যে জীবানন্দ দাশ খ্যাতির উচ্চ শিখরে পদার্পণ করেন। ১৯৫৪ সালের কলকাতার রাজপথে তিনি ট্রাম অ্যাক্সিডেন্টে মারা যান। কলকাতায় ট্রাম চালু হওয়ার পর আজ অবধি কেবলমাত্র জীবানন্দ দাশ ছাড়া ট্রাম দুর্ঘটনায় আর কেউ মারা যাননি। একদিকে চরম আর্থিক অনটন অন্যদিকে পারিবারিক অশান্তির কারণে জীবানন্দ দাশ সব সময় অন্যমনস্ক হয়ে থাকতেন বলে জানা যায়। তাঁর ট্রাম দুর্ঘটনায় মৃত্যুর ব্যাপারে অনেকে বলেন যে তিনি নাকি আত্মহত্যা করেছিলেন। যদিও তাঁর মৃত্যুর ব্যাপারে অনেকে অনেক রকম মন্তব্য করেন। কফি হাউসের অনুষ্ঠানে চন্দ্রনাথ বসু, বিশিষ্ট কবি ও নাট্যকার জীবনানন্দ বসু, কবি সুতপা দেব, লেখিকা রীতা পাল, সাহিত্য প্রেমী কবি আকাশ পাইন এর হাতে জীবনানন্দ দাশের শ্রেষ্ঠ কবিতার বই তুলে দেন চন্দ্রনাথ বসু। জীবনানন্দ বসু, আকাশ পাইন বলেন, বিদেশি তথা সাদা চামড়ার লোকেরা কোন সাহিত্যিক, কবি, নাট্যকার, অভিনেতা-অভিনেত্রীদের তকমা দিলেই তবে তাঁদের সমাদর আমাদের দেশে হয়। এই ট্র্যাডিশন যুগ যুগ ধরে হয়ে আসছে। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী জীবনানন্দ দাশ এর সঠিক মূল্যায়ন হয়নি এবং মর্যাদাও দেওয়া হয়নি। তাঁর মৃত্যুর পর তাঁকে সমাদর করা হচ্ছে। চন্দ্রনাথ বসু অভিযোগ করেন কলকাতার কোথাও জীবনানন্দ দাশের মর্মর মূর্তি নেই। তাঁর মর্মর মুর্তি বসানোর জন্য দাবি জানান। অনুষ্ঠানে রীতা পাল জীবনানন্দ দাশের বনলতা সেন অধ্যায়ের কবিতা পাঠ করেন। কফি হাউসের অনুষ্ঠানটি সুচারুভাবে সঞ্চালনা করেন মধুমিতা ধূত।