Kaji Najrul Islam
কারার ঐ লৌহ কপাট গানের সুরকে বিকৃত করার প্রতিবাদে এবার গর্জে উঠলো বিদ্রোহী কবির জন্মভিটে চুরুলিয়া
.
লুতুব আলি, চুরুলিয়া : কারার ঐ লৌহ কপাট গানের সুরকে বিকৃত করার প্রতিবাদে এবার গর্জে উঠলো কাজী নজরুল ইসলামের জন্মভিটে চুরুলিয়া। দোলনচাঁপা নজরুল ফাউন্ডেশন এর পক্ষ থেকে কবি তীর্থ চুরুলিয়ায় এ ব্যাপারে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়। নেতৃত্ব দেন কাজী নজরুল ইসলামের ভ্রাতুষ্পুত্র কাজী রেজাউল করিম ও কবির নাতনি তথা দোলনচাঁপা নজরুল ফাউন্ডেশন এর কর্ণধার, বিশিষ্ট সংগীত শিল্পী সোনালী কাজী। এ আর রহমান এক হিন্দি বাণিজ্যিক ছবিতে নজরুল ইসলামের দেশাত্মবোধক গান কারার ঐ লৌহ কপাট গানটির সুর বিকৃত করায় এই প্রতিবাদ সভা।
প্রতিবাদ সভায় হাজির ছিলেন মাস্টারদা সূর্যসেনের চতুর্থ বংশধর শেলী সেনগুপ্ত। শেলী দেবী বাংলাদেশের ঢাকা থেকে এসেছিলেন এই প্রতিবাদ সভায়। কাজী রেজাউল করিম হিন্দি ছবিতে কারার ঐ লৌহ কপাট গানটিকে অবিলম্বে বন্ধ করার দাবি জানান। সোনালী কাজী বলেন, ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে লেখনির মাধ্যমে উত্তাল করে গর্জে ওঠার পেছনে কাজী নজরুল ইসলামের ভূমিকা ও দুঃসাহসিকতা এক অনন্য নজির। কারার ঐ লৌহ কপাট এই গানটি স্বাধীনতা আন্দোলনের মূল মন্ত্র হয়ে উঠেছিল। বিকৃত সুর করে হিন্দি ছবিতে বাণিজ্যিকভাবে কাজে লাগিয়ে চরম অন্যায় করেছেন এ আর রহমান। এর বিরুদ্ধে বৃহত্তর আন্দোলনে নামার হুমকি দেন সোনালী কাজী।
শেলী সেনগুপ্ত এক সাক্ষাৎকার এই প্রতিবেদককে বলেন, কাজী নজরুল ইসলাম অবিভক্ত ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের এক মূর্ত প্রতীক। আমিও এর তীব্র বিরোধিতা করছি। নিন্দা জনাবার ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। প্রতিবাদ সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরার ভূমিকন্যা বিশিষ্ট কবি জবা পাল দত্ত, মিঠো কবি অচিন্ত্য মন্ডল, ত্রিপুরা থেকে আগত ভারত বাংলাদেশ মৈত্রী সংসদের কর্ণধার দেবব্রত দেব রায় প্রমুখ। দেশ-বিদেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শতাধিক কবি সাহিত্যিক ও গুণী ব্যক্তিরা চুরুলিয়ার এই প্রতিবাদ সভায় উপস্থিত হয়েছিলেন। এই প্রতিবাদ সভার পরে দোলনচাঁপা নজরুল ফাউন্ডেশন এর পক্ষ থেকে গুণীজন সংবর্ধনা ও কবিতা পাঠের আসর বসানো হয়েছিল। অনুষ্ঠানে ভোরের আলো সাহিত্য পত্রিকার শারদীয় সংখ্যা প্রকাশিত হয়। স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন অচিন্ত্য মন্ডল, জহর মিশ্র, হামিদা কাজী, প্রসেনজিৎ ঘোষ, উৎপল কর্মকার, অচিন্ত্য ঘাঁটি, শুক্লা সাধু ঘাঁটি, পাপ্পু মন্ডল, মিতালী পাল, জীবনানন্দ কর্মকার, ঝর্ণা কর্মকার, চিরঞ্জীব ঘোষ, গৌতম রজক, মৃণাল কান্তি পন্ডিত, মনোরঞ্জন ঘোষ প্রমুখ। স্বরচিত কবিতার প্রথম স্থান পান কবি জলধর ঘোষ, যুগ্মভাবে দ্বিতীয় হন সুচন্দ্রিতা ঘোষাল চক্রবর্তী ও মৃণাল কান্তি পন্ডিত। তৃতীয় স্থান পান সুস্মিতা দেবনাথ। স্বরচিত কবিতায় বিশেষ সম্মাননা দেওয়া হয় অচিন্ত্য মন্ডলকে মেঠো কবির শিরোপা।
এছাড়াও সম্মাননা দেওয়া হয় কবি স্বপন রুইদাস, কোয়েলি, প্রসেনজিৎ ঘোষ, ফজলুল হক, চিরঞ্জিত ঘোষ, নীল মিত্র, হাফিজুর রহমান ও হাবিব মণ্ডল কে। ত্রিপুরার কন্যা বহুমুখী প্রতিভার
অধিকারিনী জবা পাল দত্তকে প্রদান করা হয় ২০২৩ সালের প্রমিলা রত্ন পুরস্কার। সমগ্র অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সোনালি কাজী ও ডা: কোহিনুর কাজী।