UIT
ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি গোলাপবাগে র্যাগিং বিরোধী সচেতনতা আলোচনা
Bengal Times News, 13 September 2023
বেঙ্গল টাইমস নিউজ : ‘র্যাগিং বিরোধী সচেতনতা আলোচনা’ অনুষ্ঠিত হলো বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্গত ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (ইউ-আই-টি) গোলাপবাগে। এই অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পূর্ব বর্ধমান জেলার ডেপুটি পুলিস সুপার (ট্রাফিক -২) রাকেশ চৌধুরী এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন বর্ধমান থানার আই-সি সুখময় চক্রবর্তী।
এই অনুষ্ঠানকে দু’ভাগে ভাগ করা হয়েছিল। প্রথমে এই কলেজে পড়তে আসা প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় পুলিসের তরফ থেকে র্যাগিং বিরোধী কি কি পদক্ষেপ গ্রহন করা হয়েছে, সেই বিষয়ে, এবং দ্বিতীয় ভাগে কলেজের সিনিয়র ছাত্র-ছাত্রীরা যেন কোনভাবেই র্যাগিং-এ অংশ না নেয় এবং যদি কোন না কোনভাবে র্যাগিং হয়, তাহলে তাদের কেরিয়ারে কি কি প্রভাব পড়তে পারে, সেই নিয়ে আলোচনা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত ভাষনে ইউ-আই-টির অধ্যক্ষ এবং অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর অভিজিৎ মিত্র বলেন, গোটা পূর্ব বর্ধমান জেলায় একমাত্র এই কলেজেই প্রথম বর্ষের ছেলেদের হোস্টেল কলেজ ক্যাম্পাস থেকে পুরোপুরি আলাদা এবং তা কলেজ থেকে দু কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এবং মেয়েদের হোস্টেলেও প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের জন্য আলাদা উইং থাকে ও তাদের সিকিওরিটির কাছাকাছি গ্রাউন্ড ফ্লোরে রাখা হয় যাতে কোনভাবেই সিনিয়ররা এসে র্যাগিং করতে না পারে। এছাড়াও ক্লাস চলাকালীন যাতে কোন অসুবিধে না হয়, তার জন্য ক্লাসের দুদিকে দুজন সিকিওরিটি রাখা হয়। কিন্তু এর বাইরেও প্রথম বর্ষের কোন পড়ুয়ার যদি অসুবিধে মনে হয়, তাহলে কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানালে তারা সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেবেন। উনি এটাও বলেন ইউ-আই-টি ক্যাম্পাসে র্যাগিং হয় না, এবং পড়ুয়াদের পড়ায় মনোনিবেশ করার জন্য যা যা সুবিধে থাকা দরকার, সব এই কলেজে আছে।
ডি-এস-পি রাকেশ চৌধুরীও পড়ুয়াদের অভয়দান করেন এবং বলেন যে সাধারনত কোন কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পুলিস ঢুকতে চায় না। কিন্তু র্যাগিং হয়েছে খবর পেলে পুলিস এসে কড়া পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে। যেহেতু রাজ্য সরকার এই বিষয়ে কঠোর মনোভাব নিয়েছে। উনি পড়ুয়াদের ভাল নাগরিক হয়ে উঠতে পরামর্শ দেন।
এরপর সিনিয়র ছাত্র-ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে অধ্যক্ষ প্রফেসর মিত্র আবার বলেন যে র্যাগিং এক মানসিক ব্যাধি যা আমাদের সমাজ থেকে দূর করা দরকার, এজন্য দরকার সিনিয়র জুনিয়র নির্বিশেষে সব পড়ুয়াদের ভেতর বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব। উনি মনে করিয়ে দেন যে ১৯৯৯ সালে মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট, ২০০০ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এবং ২০০৯ সালে ইউ-জি-সি এবং এ-আই-সি-টি-ই র্যাগিং ব্যান করেছে এবং যথেষ্ট কড়া মনোভাব নিয়েছে, সেটা যেন কেউ ভুলে না যায়।
এই পর্বে আই-সি সুখময় চক্রবর্তী বলেন যে র্যাগিং থামানোর জন্য পূর্ব বর্ধমান পুলিশ প্রশাসন সদাসতর্ক। এই ব্যাধি আইনত দন্ডনীয় এবং মাঝে মাঝে তা ছাত্রছাত্রীদের কেরিয়ার নষ্ট করেও দিতে পারে। ফলে শিক্ষিত সমাজের উচিৎ এই অপরাধ থেকে দূরে থাকা। উনি ইউ-আই-টির অধ্যক্ষকে অনুরোধ করেন যে পড়ুয়াদের সৃজনশীল কাজের ভেতর রাখতে যাতে তারা লেখাপড়ার বাইরে ভাল কাজ নিয়ে ব্যস্ত থাকে।
অনুষ্ঠানে উপরের বক্তারা ছাড়াও ইউ-আই-টির বেসিক সায়েন্স বিভাগের উপপ্রধান, ইলেকট্রনিক্স বিভাগের প্রধান এবং আই-টি বিভাগের প্রধানরা সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন। সমস্ত অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ইউ-আই-টি অ্যান্টি র্যাগিং কমিটির সদস্য দুই সিনিয়র ছাত্রছাত্রী তসনিম আলম ও দেবরাজ সাহা।