SCROLL

উচ্চমাধ্যমিক ২০২৫ প্রথম দশে ৭২ জন। প্রথম হয়েছে রূপায়ন পাল। রূপায়ন বর্ধমান সিএমএস হাইস্কুলের ছাত্র। তাঁর প্রাপ্ত নম্বর ৪৯৭ ( ৯৯.৪ শতাংশ) # ২০২৫ সালের মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজ্যে প্রথম রায়গঞ্জের করোনেশন হাইস্কুলের অদৃত সরকার। প্রাপ্ত নম্বর ৬৯৬ নম্বর # সুপ্রিম রায়ে যোগ্য শিক্ষকদের আপাতত চাকরি বহাল # সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ২৫ হাজার ৭৫২ জন শিক্ষকের চাকরি গেল # আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি বিজয়ী ভারত, নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে তৃতীয় বারের জন্য চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি চ্যাম্পিয়ন হল ভারত # পশ্চিমবঙ্গ থেকে ১১ জন পদ্ম সম্মানে ভূষিত # ৪৭ তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প # একদিনের ক্রিকেটে পুরুষদের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড ভাঙলেন ভারতীয় দলের মেয়েরা # ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং প্রয়াত, মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯২ বছর # পূর্ব বর্ধমানে প্রথম সজল গ্রাম পঞ্চায়েতের স্বীকৃতি পেল জামালপুরের আবুইঝাটি ২ পঞ্চায়েত # দাদাসাহেব ফালকে' সম্মানে ভূষিত হলেন অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী # প্যারিস অলিম্পিকে জোড়া পদক জিতে ইতিহাস গড়লেন মনু ভাকের # নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রীসভায় পশ্চিমবঙ্গ থেকে শপথ নিলেন ডঃ সুকান্ত মজুমদার ও শান্তনু ঠাকুর # আঠারো তম লোকসভা ভোটের ফলাফল : মোট আসন ৫৪৩টি। NDA - 292, INDIA - 234, Others : 17 # পশ্চিমবঙ্গে ভোটের ফলাফল : তৃণমূল কংগ্রেস - ২৯, বিজেপি - ১২, কংগ্রেস - ১ # ভূমিকম্পের এ্যালার্ট দেবে "ভূদেব" অ্যাপ, আই আই টি'র বিজ্ঞানীদের বিরাট সাফল্য

Eye problems due to diabetes "ডায়াবেটিস জনিত চোখের সমস্যা"


 

Eye problems due to diabetes 

"ডায়াবেটিস জনিত চোখের সমস্যা"


🔸 ডাঃ দীপালোক বন্দ্যোপাধ্যায় 


"ডায়াবেটিস" - হলো নীরব ঘাতক৷ আর আমাদের ভারতবর্ষ এখন পৃথিবীর ডায়াবেটিক রাজধানী। সংখ্যা ও শতাংশে প্রায় সব বয়সীদের মধ্যে বেড়েই চলেছে ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র বা মধুমেহ রোগ৷ চিরাচরিত রীতিনীতি ও খাবারের পরিবর্তন এবং শারীরিক পরিশ্রম না করে শুয়ে বসে থাকা এ রোগ দ্রুত হারে বৃদ্ধির কারণ৷ এটি এমন একটি রোগ যা আমাদের শরীরের সব অঙ্গকে ভিতর থেকে ঝাঁঝড়া করে তোলে। ইনসুলিন একরকম হরমোন৷ যা অগ্নাশয় দ্বারা নিঃসৃত হয়৷ এটি গ্লুকোজকে দেহ কোষে প্রবেশ করতে দিয়ে সেখানে শক্তির জন্য ব্যবহৃত হয়৷ ডায়াবেটিক রোগীদের অগ্নাশয় একদম ইনসুলিন তৈরী করে না( টাইপ -১) বা কম তৈরী করে ( টাইপ -২ )৷ এজন্য ভীষণ রকম ক্ষতি হয় চোখের৷ আমরা যারা চোখ দেখি তাঁদের কাছে এলে প্রাথমিক অবস্থায় অনেকটা ক্ষতির পরিমাণ আঁচ করতে পারি।  এ থেকে দ্রুত বেড়ে যায় ছানি৷ যা আমাদের দেশে অন্ধত্বের প্রধান কারণ৷ ভারতে প্রতিবছর চার কোটি মানুষ ছানিতে আক্রান্ত হন ৷এই রোগে আক্রান্তদের ছানির প্রবণতা চারগুণ বেশী হয়। তবে , ডায়াবেটিস জনিত মৃদু আকারের ছানি শর্করা নিয়ন্ত্রক ও ছানির ওষুধে সরে যেতে পারে৷ অন্য ছানি বিলম্বিত করা গেলেও অপারেশন ছাড়া উপায় থাকে না ৷৬০ বছরের পর অনেকেরই চোখের লেন্স অস্বচ্ছ বা ঘোলাটে হয়ে যায়৷ এছাড়া ডায়াবেটিস, এটোপিক ডার্মাটাইটিস,  এলার্জি, মায়োটনিক ডিস্ট্রফি নামের চোখের পেশীর কার্য্যক্ষমতা কমে যাওয়ার অসুখ, অতি বেগুনি রশ্মির সংস্পর্শ,  অত্যাধিক মাইনাস পাওয়ার বা মাইওপিয়া , রাতকানা থাকলে কম বয়সেও ছানি পড়ে। আবছা বা ঘোলাটে দেখলে, চশমাতেও বিশেষত রাতে পড়তে অসুবিধা হলে ছানি হয়ে থাকতে পারে। ডায়াবেটিস চোখের মনি, লেন্স, রেটিনাকে নষ্ট করে দিতে পারে। তাই, ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি শব্দটি এখন শিক্ষিত মহলে বেশ পরিচিতি পেয়েছে৷ রেটিনা বা অক্ষিপট হলো আমাদের চক্ষুগোলকের পিছনের দিকে অবস্থিত স্নায়ুকোষযুক্ত একটি পাতলা স্তর। যা ক্যামেরার ফিল্মের মত ফটোরিসেপ্টরের মাধ্যমে ছবিটি ক্যাপচার করে। সেখান থেকে রেটিনার হাতে ধরা সিগন্যাল বা ছবি অপটিক নার্ভের মাধ্যমে মস্তিষ্কের ভিস্যুয়াল সেন্টারে প্রেরিত হলে আমরা দেখতে পাই। নিয়মিত সুগার পরীক্ষা ছাড়াও বছরে দু একবার চক্ষু চিকিৎসকের কাছে গিয়ে চোখের গুরুত্বপূর্ণ রেটিনার অবস্থা সম্পর্কে ওয়াকিবহাল হতে হয়৷ কারণ কেন্দ্রবিন্দু বা সেন্টার পয়েন্ট ঠিক থাকা পর্যন্ত রোগী নিজে দৃষ্টিজনিত সমস্যা বুঝতে পারেনা৷ প্রাথমিক অবস্থায় চোখের রেটিনা অংশে রক্তবাহী সরু ধমনী গুলি দূর্বল হয়ে পড়ে৷ এতে চোখে থাকা ফ্লুইড লিক করে৷ এভাবে ধমনীতে রক্ত চলাচলের সমস্যা আরো বাড়লে রেটিনার বিভিন্ন অংশে অক্সিজেন পৌঁছায় না৷ আশপাশের নালীগুলি চেষ্টা করেও রক্ত পৌঁছাতে অক্ষম হয়৷ দূর্বল নালীগুলি ফেটে গিয়ে তখন রক্ত বের হয়৷ রক্তনালী থেকে প্লাজমা বের হয়ে রেটিনার কোষে জমতে থাকে। আর চোখের কেন্দ্রে থাকা জেলি জাতীয় ভিট্রিয়াস হিউমার থেকে জেলি বা রক্ত ক্ষরণ হয়৷ যাকে বলে "ভিট্রিয়াস হেমারেজ"। এতে অনেক সময় রেটিনা ডিটাচমেন্ট হয়। তাই রেটিনা বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হলে কোন চিকিৎসাই কাজ দেয় না। অনেকে দশ বছর সুগার জনিত সমস্যায় ভুগলেও রেটিনা ততটা ক্ষতিগ্রস্ত হয় না৷ ওষুধ না খেলে ও নিয়ম না মানলে তিন চার বছরের মধ্যেও হাইপারগ্লাসেমিয়া বা উচ্চরক্ত শর্করা রোগীরও রেটিনা চিরতরে নষ্ট হয়ে যেতে পারে। দুনিয়াটা ঝাপসা হয়ে যেতে পারে৷ টাইপ -১ এবং২ দু ধরণের ডায়াবেটিক রোগীদেরই রেটিনোপ্যাথি, ঝাপসা দৃষ্টি ও ছানির আশঙ্কা বেশী। ডায়াবেটিক আক্রান্ত কুড়ি থেকে চল্লিশ ভাগ রোগীর রেটিনোপ্যাথি হতে পারে৷ ভারতীয়দের মধ্যে এই হার ২৩%। অনেক সময় রেটিনা প্রতিস্থাপন বা ভিট্রেকটমি করতে হয়। অপ্টোমেট্রিস্ট ও অপথ্যালমোলজিস্টরা দেখে বুঝলে DFA নামের এঞ্জিওগ্রাফি, OCT নামের চোখের স্ক্যান, PRP নামের ফটোকোয়াগুলেশন নামের লেজার থেরাপি, Anti VEGF নামের স্টেরয়েড ইঞ্জেকশন দিতে দরকারে ভিট্রিও রেটিনাল সার্জেনদের কাছে পাঠান৷ চোখের হরেক রকম ইনফেকশন হতে পারে ডায়াবেটিস থেকে৷ চোখের মধ্যে তরলের চাপ বৃদ্ধি হলো " গ্লুকোমা "৷ শুরুতে চক্ষু চিকিৎসক ছাড়া বুঝতে পারে না ৷এই জটিল রোগে চোখের স্নায়ু ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সারা বিশ্বে গ্লুকোমা জনিত অন্ধ সংখ্যায় দ্বিতীয়৷ যা প্রায় আট কোটি। চোখের উচ্চচাপ এর কারণ ধরা হলেও স্বাভাবিক চাপেও এই রোগ হতে পারে৷ তাই, মাথা ব্যথা, চোখে ব্যথা, ঝাপসা, ঘনঘন চশমার পাওয়ার বৃদ্ধি, মৃদু আলোতে চোখে ব্যথা হওয়া, চোখের কর্ণিয়া ক্রমাগত বড় হওয়া ও সাদা হওয়া এবং জলাবদ্ধতার সমস্যার আঁচ পেলে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া দরকার ৷জন্মগত ক্রটি ও বছরের পর বছর ধরে স্টেরয়েড ওষুধ সেবনে এই রোগ হতে পারে৷ আর পিতা বা মাতার কিংবা এই দুই বংশের নিকট আত্মীয়দের গ্লুকোমা থাকলে মাঝে মাঝে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত৷ তাদের ঝুঁকি বেশী৷ সময়ের সঙ্গে অপ্টিক নার্ভের সঙ্কোচন বাড়লে রোগী আঁচ করতে পারে। তখন অবশ্য অনেকটা ক্ষতি হয়ে যায়। অনেকক্ষেত্রে সারা জীবন ওষুধ ব্যবহার করতে হয়৷ দশ শতাংশ ব্যক্তি চিকিৎসা না করলে গ্লুকোমা জনিত কারণে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন৷ বেশী দিন ছানি ফেলে রাখলেও গ্লুকোমা হতে পারে। গ্লুকোমা রোগে ওষুধ বা লেজার বা সার্জারী যার যেটা লাগে করতে হয়। রক্তে শর্করা , ইউরিয়া ক্রিয়েটেনিন, হাইপার লিপিডিমিয়া ,কিডনির সমস্যা, রক্ত চাপ ও কোলেস্টরলের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরী। ৩০ বছরের আগে যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদের এবং ডায়াবেটিক আক্রান্ত দের গর্ভাবস্থায় প্রথম চার মাসে এর ঝুঁকি বেশী৷ এছাড়া ডায়াবেটিক রোগীদের শুষ্ক চোখ হয়৷ যাতে কৃত্রিম টিয়ার ড্রপ ও ওষুধ লাগে৷ কর্ণিয়া হলো চোখের স্বচ্ছ ও বাইরের দিকে কিছুটা উত্তল চোখের স্বচ্ছ অংশ যা চোখের সামনের অংশটিকে ঢেকে রাখে। এটি প্রোটিন ও কোষ সম্বন্বয়ে তৈরী৷ এতে রক্তনালী থাকে না ৷ডায়বেটিক রোগীদের অনেক সময় কর্ণিয়া খারাপ হয় ৷ ডায়াবেটিকদের মধ্যে কনজাংটিভাইটিস বা লাল চোখ , কর্ণিয়ায় সংক্রমণ, চোখের পাতায় বারবার অঞ্জনি, ক্যালাজিয়ান বা চোখের পাতার রোগও অনেক বেশী হয়। ওষুধ গ্রহণ, খাদ্য নিয়ন্ত্রণ, কায়িক পরিশ্রম , স্থূলতা হ্রাস, রক্তশূন্যতা ও ভিটামিন ডি ঘাটতি নিয়ন্ত্রণ, ধূমপান বর্জন ও নিয়মিত চিকিৎসকের কাছে চক্ষু পরীক্ষা করলে ডায়াবেটিস নামের নিশব্দ ঘাতক আমাদের ক্ষতি করতে পারবে না। দীর্ঘদিন ধরে চোখের চিকিৎসায় বহু রোগীকে সনাক্ত করতে পেরেছি৷ এটা চিকিৎসক হিসাবে পরম পাওয়া৷

                 ###

            চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ : ৯৭৩২২১৭৪৮৯

Tags

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad