SCROLL

ভারতের উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচিত এনডিএ প্রার্থী সি পি রাধাকৃষ্ণণ # আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি, ৮২তম ভেনিস ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের অরিজন্তি বিভাগে সেরা পরিচালকের খেতাব জয় করলেন চিত্রপরিচালক অনুপর্ণা রায়। বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর শুভেচ্ছা। # ভারতে প্রথম পশ্চিমবঙ্গে বছরে দু'বার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা চালু করেছে উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ। # পশ্চিমবঙ্গ থেকে ১১ জন পদ্ম সম্মানে ভূষিত # একদিনের ক্রিকেটে পুরুষদের সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড ভাঙলেন ভারতীয় দলের মেয়েরা # দাদাসাহেব ফালকে' সম্মানে ভূষিত হলেন অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী # প্যারিস অলিম্পিকে জোড়া পদক জিতে ইতিহাস গড়লেন মনু ভাকের # আঠারো তম লোকসভা ভোটের ফলাফল : মোট আসন ৫৪৩টি। NDA - 292, INDIA - 234, Others : 17 # ভূমিকম্পের এ্যালার্ট দেবে "ভূদেব" অ্যাপ, আই আই টি'র বিজ্ঞানীদের বিরাট সাফল্য

পাটুলিতে ২৫৬ বছরের ঐতিহ্যপূর্ণ সাহাবাড়ির দুর্গাপুজো


 

পাটুলিতে ২৫৬ বছরের ঐতিহ্যপূর্ণ সাহাবাড়ির দুর্গাপুজো


Dwarakanath Das
Bengal Times News, 30 September 2025

দ্বারকানাথ দাস, পূর্বস্থলী : পূর্ব বর্ধমান জেলার পূর্বস্থলী ২ ব্লকের পাটুলী সাহা বাড়ির দুর্গাপূজা প্রতিষ্ঠা হয় আজ থেকে ২৫০ বছর পূর্বে। এখানকার অন্যতম বণিক ছিলেন ব্যবসায়ী জমিদার ভূসম্পত্তিশালী নিত্যানন্দ (কলু) সাহা। তিনি নিজের বাড়িতে মহাধুমধাম করে জাঁকজমক ভাবে দুর্গাপূজার সূচনা করেন। তাঁর তিন পুত্র চারুচন্দ্র সাহা, সতীশচন্দ্র সাহা, ব্যামকেশ সাহা। পরবর্তীকালে তারা চৌধুরী উপাধি লাভ করেন, ব্যবসা বাণিজ্যের স্বার্থে নিত্যানন্দ সাহার মৃত্যুর পর চারুচন্দ্র সাহা এবং সতীশচন্দ্র সাহার দুই বিরাট অট্টালিকা বাড়িতে দুর্গাপুজোর বিপুল আয়োজন করেন। বর্তমানে তার বংশধররা এই তিনশত বছরের প্রাচীন দুর্গাপুজো মহাধুমধাম করে পুজো করে আসছে।

পাটুলীর সাহা বাড়ির দুর্গাপুজোর বৈশিষ্ট্য হলো পুজোর বোধনের দিনই মহাসমারোহে গঙ্গার ঘাটে নবপত্রিকা স্নান করানো। স্নান পর্ব চলাকালীন দেবীর ঘট গঙ্গাজলে ভর্তি করা হলেই পুরোহিত স্নান করেন। পাঁচটি তোপধ্বনি করা হতো, পরবর্তীকালে বেশ কয়েক বছর তাকে দোলানো বন্দুকের গুলি ছোড়া হতো। এখন তা হয় না। এখন আতস বাজি বিধিনিষেধ থাকার ফলে তোপ ফাটানো রীতি প্রচলিত হয়ে আসছে বলে সাহাবাড়ির প্রবীন সদস্য নারায়ণ চন্দ্র সাহা জানান।

পাটুলীর সাহা বাড়ির দুর্গাপুজোর প্রতিষ্ঠাতা নিত্যানন্দ সাহার প্রয়াণকালে তার পুত্র চারুচন্দ্র সাহা, বোমকেশ সাহা এবং সতীশচন্দ্র সাহা। পরে বর্তমান প্রজন্ম সমরেশ চন্দ্র সাহার আমলেও নিষ্ঠাভাবে জাঁকজমক ভাবে দুর্গাপুজো সম্পন্ন করা হয়। রথযাত্রার দিনে বাঁশে খড় বাঁধা এবং মাটি দেওয়া হয়। মহলয়ার দিন থেকে শুরু হয় দেবীর আনুষ্ঠানিক ভাবে পুজো, লোকাচার মতে। অষ্টমীর দিন সাহাবাড়ির মেয়েদের ও বউদের রীতি মেনে সিঁদুর খেলা সম্পন্ন হয়। নবমীর দিন হয় কুমারী পুজো। বলিদান হয় এখানে চাল কুমড়ো ও আঁখ। দেবীর নিরঞ্জনের প্রথা ভারী অদ্ভুত। আগের রাতে খুঁজে আনা হতো নীলকণ্ঠ পাখি'। তাকে খাঁচায় পুরে রাখা হতো। বর্তমানে এই নীলকণ্ঠ পাখি অমিল, পাওয়া যায় না। নিরঞ্জনের দিন বিশেষ শোভাযাত্রার আগে দেবী দুর্গা পুজো মন্ডপের থেকে বার করার পর বাঁশের বেহারা করে গঙ্গা বক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। তার আগে উড়ানো হয় নীলকণ্ঠ পাখি খাঁচা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। দুটি নৌকার মাঝে বাঁশের পাটাতনে মাচায় তোলা হয় দেবীকে। শুরু হয় নদীবক্ষে বিসর্জনের মহাসমারোহে শোভা যাত্রা। বর্তমানে এই প্রথা চালু আছে প্রতি বছর নৌকায় বিসর্জন পর্ব শেষ হয়। এই নিরঞ্জন পর্ব দেখার জন্য গঙ্গার ঘাটে মেলা বসতো, বর্তমানে তা হয় না। নৌবিহার আর হয় না। নৌবিহার ছিলো দেখার মতো। জেলেদের একটি নৌকায় সাজানো হতো ময়ূরের মুখ দিয়ে। বলা হতো ময়ূরপক্ষী তাতে একজন রাজা সেজে থাকতো, এই রাজার সাজ করতেন সাহা বাড়ির যারা যাত্রা পালায় অভিনেতা সাজাতেন। অপর নৌকায় ছিলো মকর মুখো তাতেও ১৬জন করে দক্ষ নৌকাচালক থাকতো, আগে একটি নৌকা ছিলো তাদের বলা হতো মাতালের নৌকা। সারা গঙ্গা বক্ষ জুড়ে তাদের উৎসাহে নৌকা চালানো হতো। এটি পাটুলীর ঐতিহ্য মণ্ডিত এক উৎসব হলেও বর্তমানে এটি বন্ধ হয়ে গেছে। তবে পাটুলীর হাইস্কুল মাঠে ভাগীরথীর পাড় জুড়ে বিশাল মেলা বসে দূরদূরান্ত থেকে বহু দুর্গাঠাকুর এখানে এনে উৎসব পালন করা হয়। এসবের মধ্যে দিয়ে পাটুলীর সাহা বাড়ির জাঁকজমক পূর্ণ দুর্গা পুজোর কোন খামতি নেই। বিশাল রাজবাড়ির আদলে দালানকোঠা সাজানো হয় পাটুলী পার্শ্ববর্তী গ্রাম থেকে হাজার হাজার মানুষ এখানকার দুর্গাপুজা উৎসব দেখতে আসেন। সাহা বাড়ির দুর্গাপ্রতিমা নিরঞ্জন প্রতি বছরের মতো গঙ্গাবক্ষে নৌকাযোগে বিসর্জন পর্ব শেষ হয়। সেই প্রাচীন রীতি বর্তমানে চলে আসছে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

Top Post Ad

Below Post Ad