Zero Discrimination Day
বৈষম্য দূর করার বার্তা দিয়ে শূন্য বৈষম্য দিবস উদযাপন
Bengal Times News, 2 March 2024
লুতুব আলি, কলকাতা : কলকাতা কবিতা উৎসবে উদযাপিত হল শূন্য বৈষম্য দিবস। ১ মার্চ ছিল শূন্য বৈষম্য দিবস। এই উপলক্ষে শিয়ালদহ'র কৃষ্ণপদ ঘোষ মেমোরিয়ালে ঐতিহ্যপূর্ণ দিনটি মর্যাদার সঙ্গে পালন করা হল। আয়োজক সাহিত্যলোক পত্রিকা। আয়োজকদের পক্ষ থেকে বিশিষ্ট সংগঠক, সমাজসেবী চন্দ্রনাথ বসু স্বাগত ভাষণ দেন। অনুষ্ঠানে চন্দ্রনাথ বাবু তো বটেই উপস্থিত অনেকেই হলুদ জামাকাপড় পড়ে সুসজ্জিতভাবে অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন। প্রাক বসন্ত উৎসবের উষ্ণ স্পর্শ এখানে অনুভূত হয়। অনুষ্ঠানে অভিনবত্ব ছিল সবুজায়নের বার্তা। গাছের গোড়ায় জল ঢেলে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। এদিনের বিশেষ আকর্ষণ ছিল ১৯ কিলোগ্রাম ওজনের একটি ঢাউস কুমড়ো।
এই কুমড়োকে সভাস্থলে সুসজ্জিত ভাবে হাজির করানো হয়েছিল। কুমড়টির গায়ে স্বর্ণাক্ষরে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলেই স্বাক্ষর করেন। কিছু খেটে খাওয়া মানুষকে সভাস্থলে হাজির করিয়ে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সাধারণত অনুষ্ঠান গুলিতে দেখা যায় উত্তরীয় দিয়ে সকলকে বরণ করা হয়। এখানে গামছা দিয়ে অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলকে বরণ করা হয়। বাংলার ঐতিহ্যকে এখানে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। চাষীদের কুমড়ো, বাংলার তাঁত শিল্প সকলকে গামছা দিয়ে বিশেষ বার্তা দেওয়া হয়। ৩ মার্চ পল্লী কবি কুমুদ রঞ্জন মল্লিক এর জন্ম। ১ মার্চ ছিল অনুষ্ঠানের প্রধান উদ্যোক্তা চন্দ্রনাথ বসুর জন্মদিন। কেক কেটে দুজনেরই জন্মদিন পালন করা হয়। কুমুদ রঞ্জন মল্লিকের নাতনি বিশিষ্ট সাহিত্যিক মহাশ্বেতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনুষ্ঠানে পৌরহিত্য করেন।
চন্দ্রনাথ বসু বলেন, রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কবি সাহিত্যিকরা এদিন অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন দিনটিকে মর্যাদার সঙ্গে পালন করা হয়। তিনি বলেন, 'বৈষম্য এখনো শূন্যতার উচ্চ শিখরে পৌঁছতে পারেনি। বৈষম্যকে আমরা জিরো টলারেন্সে দেখতে চাই। আদিমকাল থেকে, প্রাচীনকাল থেকে এখনো বৈষম্য আমাদের সমাজে রন্ধ্রে রন্ধ্রে চালিত হচ্ছে। শূন্য বৈষম্য দিবস উপলক্ষে সমাজের সর্বস্তরে বৈষম্য দূর করার বার্তা দিতেই আমাদের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা'। অনুষ্ঠানে কবিরা প্রত্যেককেই ১০ লাইন করে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন। হুগলির শ্রীরামপুর থেকে বিশিষ্ট কবি তুলতুলি গঙ্গোপাধ্যায়, জিরাটের কবি মলয় চন্দ্র হালদার, কলকাতা বালিগঞ্জের বর্ষীয়ান কবি অশোকানন্দ, দুর্গাপুরের বিশিষ্ট কবি ও শিক্ষিকা, সংগঠক সমাজসেবী মালতী মন্ডল সহ অন্যান্যরা এই প্রতিবেদককে বলেন, চন্দ্রনাথ বসুর একক প্রচেষ্টায় দিনটি এক ভিন্নভাবে পালিত হলো।
অনুষ্ঠানের বৈচিত্র্যতা মনকে ছুঁয়ে যায়। অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট নাট্য ব্যক্তিত্ব ও বর্ষীয়ান কবি সত্যকাম বাগচী, বিশিষ্ট কবি বরুণ চক্রবর্তী, সংগঠনের চেয়ারম্যান রঞ্জনা গুহ, সভাপতি বিউটি দাস, শিব শংকর বক্সী, রঞ্জনা কর্মকার, সুস্মিতা চট্টোপাধ্যায়, বাংলাদেশের বিশিষ্ট কবি ও বাচিক শিল্পী নীলিমা নীল, শৈলী শপথের কর্ণধার মুকুল চক্রবর্তী, রক্তকরবীর কর্ণধার নন্দিনী লাহা, বিশিষ্ট কবি ও চলচ্চিত্র শিল্পী সোনালী ঘোষ প্রমুখ। অনুষ্ঠানে গুণীজন সংবর্ধনা ও চারা গাছ বিতরণ করা হয়। সাহিত্য লোক পত্রিকা ও সকলের চোখে গাছ কাকু চন্দ্রনাথ বসুকে নিয়ে দুটি বই প্রকাশিত হয়। উল্লেখ্য, চন্দ্রনাথ বসু সবুজায়ন করতে নিরন্তর গাছ লাগানোর বার্তা দেন। তাঁর প্রতিটি অনুষ্ঠানে থাকে শিশু বৃক্ষ। এমনকি সামাজিক অনুষ্ঠানেও তিনি শিশুবৃক্ষ উপহার স্বরূপ তুলে দেন। চন্দ্রনাথ বাবুর ভিন্নধর্মী মহৎ উদ্যোগের প্রতি সকলেই সাধুবাদ জানান। অনুষ্ঠানটি সুচারুভাবে সঞ্চালনা করেন বিশিষ্ট কবি, বাচিক শিল্পী, সাংবাদিক মধুমিতা ধূত।